জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুক হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত কয়েকদিন ধরে দুই দেশের সীমান্তে প্রতিদিন গোলাগুলি চলছে। এরই মধ্যে ভারতের কর্ণাটক রাজ্য সরকারের আবাসন ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী জামির আহমেদ খান বলেছেন, গায়ে আত্মঘাতী বোমা বেঁধে পাকিস্তানে হামলা চালাতে চান তিনি। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
ওই মন্ত্রীর একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, শরীরে বোমা নিয়ে পাকিস্তানে গিয়ে আত্মঘাতী হামলা চালাবেন তিনি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র কাছে অনুমতি চেয়েছেন তিনি।
প্রতিবেদন মতে, গত শুক্রবার (২ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে জামির বলেন, ‘পাকিস্তান বরাবরই ভারতের শত্রু। এমন দুঃখের দিনে যদি প্রধানমন্ত্রী মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আমাকে যদি সুযোগ দেন, তবে আমি নিজেই সীমান্তে গিয়ে লড়াই করতে প্রস্তুত। আমরা সবাই ভারতীয়, আমরা হিন্দুস্তানি। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আত্মঘাতী বোমা সরবরাহের আহ্বানও জানিয়ে কংগ্রেস দলীয় এই মন্ত্রী বলেন,
আমি যুদ্ধের জন্য পাকিস্তানে যাব। মোদি-শাহ আমাকে আত্মঘাতী বোমা দিন। আমি তা শরীরে বেঁধে পাকিস্তানে গিয়ে হামলা করব।
এর আগে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুক হামলার তীব্র নিন্দা করে একে ‘অমানবিক কাজ’ বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক ভারতীয়র ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত, এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়।’ কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির কড়া পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীরা ২৬ জন বেসামরিক নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে, যাদের বেশিরভাগই ছিল পর্যটক। তখন থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে। এ ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে। ইসলামাবাদ সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’র আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতির বদলে ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের নেতাদের মধ্যে বাগযুদ্ধের পাশাপাশি সীমান্তে গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে গোলাগুলি চলছে।
ভারত দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে। পাকিস্তানও কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি থেকের বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। উভয় দেশ একে অপরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
এমনকি উভয় দেশই বসবাসরত প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে অবিলম্বে দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে।
ভারত সরকারের নির্দেশের পর গত ২২ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৫০ জন পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ফিরেছে। অন্যদিকে পাকিস্তান থেকে ফিরেছেন প্রায় এক হাজার ভারতীয়।
এম এইচ/
Discussion about this post