গ্রিস প্রথম খ্রিস্টান অর্থোডক্স সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে সমকামী বিয়েকে বৈধতা দিয়েছে। গ্রিসের পার্লামেন্ট সমকামী বিবাহের অনুমতি দেওয়ার বিল অনুমোদন করেছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে এই নতুন আইনটি অনুমোদন পায়। এর অধীনে সমকামী দম্পতিরা বিয়ে ও সন্তান দত্তক নেওয়ার অনুমতি পাবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্যমতে, অর্থোডক্স খ্রিস্টান অধ্যুষিত দেশগুলোর মধ্যে গ্রিসই প্রথম সমলিঙ্গে বিয়েতে বৈধতা দিল। শক্তিশালী অথোর্ডক্স গির্জার বিরোধিতার পরও রক্ষণশীল সরকার এ সংস্কারের পথে হেঁটেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্য দেশ এরইমধ্যে সমলিঙ্গে বিয়ে বৈধ করেছে। বিশ্বের ৩৫টি দেশে এখন সমলিঙ্গ বিয়ে আইনত বৈধ। বিবিসি বলছে, গ্রিস সমলিঙ্গে বিয়ে বৈধতা দেওয়ায় এখন ইউরোপে তাদের প্রতিবেশী আরো কয়েকটি দেশ হয়তো একই উদ্যোগ নেওয়ার সাহস দেখাবে। ওইসব দেশে গির্জাগুলো সমলিঙ্গে বিয়ের ঘোর বিরোধী।
বিলটি পাসের পর এক প্রতিক্রিয়ায় গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস বলেছেন, “নতুন এই আইনটি সাহসী সিদ্ধান্ত, এর মধ্যদিয়ে গুরুতর একটি অসমতার বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে।”
এদিকে নতুন আইন দেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে। অর্থোডক্স চার্চের নেতৃত্বে এই নতুন আইনের তীব্র বিরোধিতা করে এথেন্সে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। রাজধানীর সিনটাগমা স্কোয়ারে এই আইনের বিরুদ্ধে ব্যানার প্রদর্শন করেন অনেকে এবং কেউ কেউ বাইবেলের অনুচ্ছেদ গেয়ে শোনান। অর্থোডক্স চার্চের প্রধান আর্চবিশপ আইরনিমোস বলেছেন, ‘এই ব্যবস্থা মাতৃভূমির সামাজিক সংহতিকে কলুষিত করবে।’
ভোটের আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছিলেন, ‘অদৃশ্য মানুষরা অবশেষে আমাদের চারপাশে দৃশ্যমান হবে এবং তাদের সঙ্গে অনেক শিশুও তাদের সঠিক জায়গা খুঁজে পাবে।’ এদিকে গ্রিসের এলজিবিটিকিউ সংস্থাগুলো এই আইনকে স্বাগত জানিয়েছে। সমলিঙ্গের অভিভাবকদের গ্রুপ ‘রেইনবো ফ্যামিলিজ’-এর প্রধান স্টেলা বেলিয়া বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এটি আনন্দের দিন।’
কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিসের দল নিউ ডেমোক্রেসি পার্টির পক্ষ থেকে পার্লামেন্টে সমকামীদের বিয়ে সংক্রান্ত বিলটি উত্থাপন করা হয়েছিল। টানা দুই দিনের বিতর্কের পর বৃহস্পতিবার বিলের ওপর ভোটাভুটি হয়। এ সময় উপস্থিত ২৪৫ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৭৬ জন সমলিঙ্গের বিয়ের বৈধতা ও দত্তক নেওয়ার পক্ষে ভোট দেন।
সূত্র: বিবিসি
এ জেড কে/
Discussion about this post