গত ১৯ ডিসেম্বর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরত আসেন ফেনীর দাগনভূঞার গিয়াস উদ্দিন। মানসিক ভারসাম্যহীন এই ব্যক্তি বিমানবন্দরে নেমেই ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। পরে তাকে উদ্ধার করে ব্র্যাক মাইগ্রেশন সেন্টারে রাখা হয়। সেদিন তার কাছে কোনো পাসপোর্ট ছিল না। এরপর তার পরিচয় ও ঠিকানা বের হলে পবিবারের সাথে যোগাযোগ করে ব্র্যাক ও এপিবিএন। কিন্তু পরিবার তাকে কিছুতেই নিতে চাচ্ছিল না। অবশেষে দফায় দফায় চেষ্টার পর গিয়াস উদ্দিনের পরিবার তাকে নিতে রাজি হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আশকোনা এলাকার ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে গিয়াস উদ্দিনকে নিয়ে যান স্বজনরা। এসময় সংশ্লিষ্টরা গিয়াসকে তার পরিবারের হাতে তাকে তুলে দেন।
বিয়ষটি নিশ্চিত করেছেন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার বিভাগের ম্যানেজার আল আমিন নয়ন।
এই কর্মকর্তা জানান, মানসিক ভারসাম্য হারানো এই প্রবাসীকে বাড়িতে নিতে গত সাত দিন ধরে আপত্তি জানানোর জন্য অনুতপ্তও হয়েছেন স্বজনরা। এ কাজে সহায়তা করেছেন ফেনীর দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাশিম। তার মধ্যস্থতায় এটি সম্ভব হয়েছে। সকালে তার দুই বোন আশকোনার ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে এসে তাকে নিয়ে গেছেন। এ সময় তারা জানিয়েছেন, তাদের আরও এক ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় প্রবাসে আছেন। ভাইদের সঙ্গে দীর্ঘদিন তাদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। কোনো টাকা-পয়সাও বাড়িতে দিতেন তারা। একারণে কিছুটা অভিমান থেকে গিয়াস উদ্দিনকে নিতে চায়নি পরিবার। তবে বিবাহিত গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী কোনো যোগাযোগ করেনি।
মানসিক অসুস্থ গিয়াস উদ্দিনের চিকিৎসার বিষয়ে ব্র্যাক চেষ্টা করছে জানিয়ে সুস্থ হলে পরবর্তী কর্মসস্থানের বিষয়েও সহযোগিতা করবে বলে জানান সংস্থাটির এই কর্মকর্তা।
এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর মালয়েশিয়া থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বিকেলে ঢাকায় আসেন গিয়াস উদ্দিন। ওই সময় তিনি বিমানবন্দর নেমে ভবঘুরের মতো ঘুরছিলেন। তাকে দেখে এপিবিএন সদস্যরা নিয়ে যান। পরে তারা ব্র্যাককে খবর দিলে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে আশকোনায় ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে রাখা হয়। কিন্তু সেদিন তার পাসপোর্ট না থাকায় পরিবার পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন ব্র্যাকের কর্মকর্তারা। গিয়াসের গ্রামের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা থানার রাজাপুর ইউনিয়নের সমাশপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের শাহাব উদ্দিনের ছেলে।
পরে তার ঠিকানায় রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শাহ আলমের মাধ্যমে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্র্যাক ও এপিবিএন। তার বাড়িতে দফায় দফায় যান ব্র্যাকের কর্মকর্তারা। কিন্তু গিয়াস উদ্দিন মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তারা তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। সাত দিনের মাথায় অবশেষে তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন এবং গিয়াস উদ্দিনকে নিয়ে যান।
এ জেড কে/
Discussion about this post