মহান আল্লাহ যেমন মানুষ সৃষ্টি করেছেন, তেমনি তাদের রিজিকেরও ব্যবস্থা করেছেন। সেই মানুষকে কখনও সচ্ছলতা দিয়ে তিনি পরীক্ষা করেন; আবার কখনও অভাব-অনটন দিয়ে। সব অবস্থায় মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করতে হবে; তার কাছেই অভাব-অনটন থেকে মুক্তি চাইতে হবে। আর এজন্য পবিত্র কোরআনে দোয়াও রয়েছে।
মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যখন তোমাদের প্রতিপালক ঘোষণা করেছিলেন, তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই অধিক দান করব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৭)
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেবো এবং তোমার অভাব ঘুচিয়ে দেবো। আর যদি তা না করো, তবে তোমার হাত ব্যস্ততায় ভরে দেবো এবং তোমার অভাব দূর করবো না।’ (তিরমিজি)
অভাব-অনটনের সময় নিরাশ হওয়া যাবে না। মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে চেষ্টা ও দোয়া করতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি বেশি বেশি এই দোয়াটি পাঠ করবে তার অভাব-অনটন দূর হয়ে যাবে।
দোয়াটি হলোঃ
اللّهُمَّ إنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْفَقْرِ، وَالْقِلَّةِ، وَالذِّلَّةِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أَظْلِمَ أو أُظْلَمَ (উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল ফাকরি, ওয়াল কিল্লাতি, ওয়াজজিল্লাতি, ওয়া আউজুবিকা মিন আন আজলিমা আও উজলিমা।) (বুখারি: ১৫৪৪)
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দরিদ্রতা থেকে এবং আপনার কম দয়া থেকে ও অসম্মান থেকে এবং আমি আপনার কাছে আরও আশ্রয় চাচ্ছি, কাউকে জুলুম করা থেকে অথবা কারও দ্বারা অত্যাচারিত হওয়া থেকে।)
অভাব থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহ আমাদের যে দোয়া শিখিয়েছেন, সেটি হলো,
اللّٰهُمَّ رَبَّنَاۤ اَنۡزِلۡ عَلَیۡنَا مَآئِدَۃً مِّنَ السَّمَآءِ تَكُوۡنُ لَنَا عِیۡدًا لِّاَوَّلِنَا وَ اٰخِرِنَا وَ اٰیَۃً مِّنۡكَ ۚ وَ ارۡزُقۡنَا وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ (উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বানা আনজিল আলাইনা মায়িদাতাম মিনাস সামায়ি তাকানু লানা ঈদান লিআওয়ালিনা ওয়াআখিরিনা ওয়া আয়াতাম মিনকা। ওয়ার জুকনা ওয়া আনতা খাইরুর রজিকিন।) (সুরা মায়েদা, আয়াত: ১১৪)
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, হে আমাদের রব, আসমান থেকে আমাদের প্রতি খাবারপূর্ণ দস্তরখান নাজিল করুন, যা আমাদের জন্য আনন্দের কারণ হবে; আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের জন্যও। আর আপনার পক্ষ থেকে এক নিদর্শন হবে। এছাড়া আমাদের রিজিক দান করুন, আপনিই শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা।)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার করবে (আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিউ ওয়াতুবু ইলাইহি) মহান আল্লাহ তাকে সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। (আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ )
সবশেষ কথা হলো, রিজিকের মালিক হলেন আল্লাহ। তিনি যাকে চান অঢেল রিজিক দান করেন। আমাদের কাজ হলো তার নির্দেশ অনুযায়ী পরিশ্রম করে হালাল উপার্জন করা।
এ ইউ/
Discussion about this post