যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে অবৈধ অভিবাসী ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান এবং এর ফলে সৃষ্টি হওয়া বিক্ষোভ ও সহিংসতা তীব্র আকার নিয়েছে। এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মূলত আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং সংঘর্ষ রোধ করাই লক্ষ্য।
গত শুক্রবার (৬ জুন) থেকে দক্ষিণ লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যারামাউন্ট এলাকায় ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) ফেডারেল এজেন্টরা অভিযান চালিয়ে অন্তত ৪৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করে। এর প্রতিবাদে ওই এলাকার লোকজন সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ শুরু করে এবং শনিবার (৭ জুন)-ও এই প্রতিবাদ অব্যাহত থাকে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই অভিযান অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ঢোকা রোধ এবং আইন শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য জরুরি ছিল।
অভিযানের সময় প্যারামাউন্ট এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইসিই ও অন্যান্য ফেডারেল এজেন্টদের সংঘর্ষ ঘটে। বিক্ষোভকারীরা ‘আইসিই এখান থেকে বেরিয়ে যাও’ ও ‘কোনো মানুষই অবৈধ নয়’ স্লোগান দেয়। সেখানে টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। অনেক বিক্ষোভকারী মেক্সিকোর পতাকা হাতে এবং গ্যাস মাস্ক পরে উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশে অংশগ্রহণ করেন। একদিকে আইসিই কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, সহিংসতা ও সম্পত্তি ধ্বংস করা যাবে না, অন্যদিকে ফেডারেল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে দেয়, আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা হবে।
এই ঘটনায় ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন ব্যাস বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে ফেডারেল অভিযানের সমালোচনা করেন। গভর্নর নিউসম বলেন, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা উত্তেজনা বাড়াবে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে। মেয়র কারেন ব্যাস বলেন, এই অভিযান সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করছে এবং শহরে “ভয় ছড়াচ্ছে।” ট্রাম্প এই সমালোচনার জবাবে বলেন, যারা নিজেদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারছে না, ফেডারেল সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেবে এবং আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করবে।
ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিদিন ৩,০০০ অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে এই অভিযানে অনেক বৈধ স্থায়ী বাসিন্দারাও আটক হয়েছেন, যা আইনি ও মানবাধিকারগত দিক থেকে বিতর্ক তৈরি করেছে। হোয়াইট হাউস বলেছে, লস অ্যাঞ্জেলেসে আইসিই অফিসার ও ফেডারেল এজেন্টদের ওপর সহিংস হামলা হচ্ছে, এবং স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে ফেডারেল সরকার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করে আইনশৃঙ্খলা ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্রঃ বিবিসি, আল-জাজিরা
এস এইচ/
Discussion about this post