আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর কাছ থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার পাওয়া না গেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতির কোনো উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর স্থানীয় সময় শুক্রবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আইএমএফের ঋণ খুব জরুরি নয়। না পেলে দেশের অর্থনীতি থেমে যাবে না।”
এই সাক্ষাৎকারটি শনিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশনের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মর্তুজা।
গভর্নর আহসান মনসুর বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে নিজস্ব আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার স্বাধীনভাবে বাস্তবায়ন করা। যেসব শর্ত গ্রহণযোগ্য, সেগুলোর ভিত্তিতেই আমরা ঋণ নিতে চাই।”
তিনি বলেন, “আমরা শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তান হয়ে যাইনি যে আমাদের জোর করেই ঋণ নিতে হবে। ৬ মাস আগেও হয়তো দরকার ছিল, এখন সে পরিস্থিতি নেই।”
আইএমএফ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চললেও বিনিময় হার ইস্যুতে এখনো মতৈক্যে পৌঁছানো যায়নি। গভর্নরের ভাষায়, “এখন বাজার স্থিতিশীল। ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে না, হস্তক্ষেপও করা হচ্ছে না। অহেতুক বাজার অস্থির করাও ঠিক হবে না।”
তিনি আরও জানান, কর রাজস্ব আদায়ে আপাতত কোনো জটিলতা নেই, তবে আইএমএফ মুদ্রার বিনিময় হারে নমনীয়তা চায়, যেখানে বাংলাদেশ কিছুটা ‘দোটানায়’ রয়েছে।
আইএমএফ ঋণ না পেলে অন্য দাতা সংস্থার অর্থায়ন প্রভাবিত হয় কিনা জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, “প্রকল্প ঋণে সমস্যা হয় না। বাজেট সহায়তার জন্য আইএমএফের প্রত্যয়ন দরকার হয়। তবে বাজেট সহায়তা না নেওয়ার দিকেই ভাবা উচিত।”
তার মতে, “প্রকল্প ঋণে বিনিয়োগের মাধ্যমে সামাজিক ও আর্থিক রিটার্ন পাওয়া যায়। কিন্তু বাজেট সহায়তায় তা সম্ভব হয় না।”
আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন সভায় অংশ নিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা।
গভর্নর বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি বিশ্বজুড়ে ঝড় তুলেছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের ওপরও পড়ছে। তাই আইএমএফ নিজেও কিছুটা ‘পিছিয়ে’ আছে। আলোচনা এখনও চলছে। ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলে ভালো, না হলেও সমস্যা নেই।”
এ ইউ/
Discussion about this post