সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ক্রিকেটার সবাই আইসিসির নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গেছে। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির আর্থিক কাঠামোর সরাসরি সমালোচনা করতেও দ্বিধা করছেন না তারা। বিগ থ্রির দাপটে অন্যান্য দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, সেই কথাই বারবার বলার চেষ্টা তাদের।
এমন অবস্থায় এবার নতুন এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেছেন উইন্ডিজ ক্রিকেটের প্রধান নির্বাহী জনি গ্রেভ। তার অভিযোগ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট যাতে আর কখনও শক্তিশালী দল না হয়ে উঠতে পারে সেটিই চেষ্টা করছে প্রভাবশালী ক্রিকেট দলগুলো। আর তাতে আইসিসি সম্মতি দিচ্ছে বলেও মন্তব্য তার।
একটা সময় ক্রিকেট বিশ্বে ছড়ি ঘুরিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্যার গ্যারি সোবার্স, ভিভ রিচার্ডস, ক্লাইভ লয়েড, ম্যালকম মার্শাল, জোয়েল গার্নাররা মিলে জিতিয়েছিলেন প্রথম দুই বিশ্বকাপ। এরপর সেই হাল ধরেছিলেন কার্ল হুপার, ব্রায়ান লারা, কার্টলি অ্যামব্রোস কিংবা কোর্টনি ওয়ালশরা।
কিন্তু, শেষপর্যন্ত উইন্ডিজ ক্রিকেটের দাপট আর থাকেনি। ১৯৯৬ সালে তারা সবশেষ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছিল। ফাইনালে খেলেছিল আরও আগে। ওয়ানডে ক্রিকেটের আরেক বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তারা জয় করেছিল ২০০৪ সালে। এরপর ২০০৬ আসরে খেলেছিল সেমিফাইনাল। এরপর থেকে ওয়ানডে ফরম্যাটে বলার মত সাফল্য নেই দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
এমনকি ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফাই করতে পারেনি। এরপর অবশ্য বলার মত সাফল্য হিসেবে ২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাদের বিপক্ষেই টেস্ট জিতেছে উইন্ডিজ। এবার আবার নতুন করে সেই আর্থিক ইস্যু সামনে আনলেন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের কর্তা। উইজডেনের এক পডকাস্টে জনি গ্রেভ বলেন, ‘বিশ্ব ক্রিকেটে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দরকার- আমার মনে আমরা সবাই এই উক্তিতে বিরক্ত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অনুভব করি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট যেন আর শক্তিশালী না হয়ে উঠতে পারে সেটার জন্য বিশ্ব ক্রিকেটের প্রতিটি স্তরে যা যা করা প্রয়োজন, সেটাই করছে তাঁরা।’
বিশ্ব ক্রিকেট কিভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পিছিয়ে দিচ্ছে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে আগের মতো শক্তিশালী করে তোলাটা অসম্ভব নয়। তেমনি আইসিসি থেকে আরেকটু আর্থিকভাবে সাহায্য পাওয়াটা বড় কোনো বিষয় নয়। আইসিসি হয়তো ফান্ড বাড়িয়েছে, কিন্তু আমাদের লভ্যাংশের হার সাত শতাংশ থেকে পাঁচ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। এটা আমাদের আরও বড় বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’
এর আগে বিশ্বকাপ চলাকালে ভারতের মাটিতেই আইসিসির আর্থিক কাঠামোর সমালোচনা করেছিলেন উইন্ডিজের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে লয়েড বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, সবার সবকিছুর সমান ভাগ পাওয়া উচিৎ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তাকান—ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কি লিভারপুলের চেয়ে বেশি অর্থ পায়? আর্সেনাল কি চেলসির চেয়ে বেশি পায়? না, তারা সমান ভাগ পায়।’
এ এস/
Discussion about this post