হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থেকে তৈরি হয় শারীরিক ও মানসিক নানা জটিলতা। এজন্য বলা হয়ে থাকে,
হরমোনের ভারসাম্যই সকল সুখের মূল!
জেনে নেওয়া যাক এমন ৬ অভ্যাস সম্পর্কে , যাঁর কারণে নষ্ট হচ্ছে হরমোনের ভারসাম্য।
১. সকালের নাশতায় অন্তত ২০ গ্রাম প্রোটিন না খাওয়া
আমাদের খাদ্যাভ্যাসে শর্করাজাতীয় খাবারের রাজত্ব। এদিকে শহুরে নাগরিক জীবনযাপনে শরীরে শর্করাজাতীয় খাবারের চাহিদা কম। কেননা শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ খুবই কম। অনেকে তো আবার সকালে নাশতা না করাটা রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত করেছেন। অথচ সকালের নাশতায় অতিরিক্ত শর্করা গ্রহণ অথবা নাশতা না করা—দুটোই মারাত্মক ক্ষতিকর। সকালের নাশতাকে বাদ দেয়ার কোনো উপায় নেই বললেই চলে এবং সকালের নাশতা হতে হবে প্রোটিনসমৃদ্ধ।
কর্টিসলকে বলা হয় ‘স্ট্রেস’ বা মানসিক চাপের হরমোন। কারণ, প্রাথমিকভাবে এটা মানসিক চাপ তৈরিতে সরাসরি ভূমিকা রাখে। সবচেয়ে বেশি কর্টিসল নিঃসৃত হয় সকালবেলা । সকালের নাশতায় যদি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া হয়, তাহলে তা কর্টিসলের নিঃসরণ কমিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখে। আর এই অভ্যাস মেটাবলিজম সিস্টেম তথা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
একটি সেদ্ধ ডিমে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। ফলে সকালের নাশতায় আপনি দুটি সেদ্ধ ডিম খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।
২. খালি পেটে ক্যাফেইন
অনেকেরই সকালে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা বা কফি দিয়েই শুরু হয় দিন। এর ফলেও কর্টিসল নিঃসরণের মাত্রা বাড়ে।
৩. জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড ও চিনিজাতীয় খাবার খাওয়া
জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড আর অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টিজাত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা এতে প্রচুর পরিমাণে ইনসুলিন উৎপন্ন হয়, যার ফলে চুল পড়া, ত্বক ও ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়!
৪. রাতে ঠিকমতো না ঘুমানো
মেলাটোনিন আমাদের ঘুমের চক্র ঠিক রাখে। দিনের আলোয় মেলাটোনিন নিঃসরণ হয় না বললেই চলে। তাই ভোরের আলো দেখে আপনি ঘুমাতে গেলেন, তাতে শরীরের স্বাভাবিক হরমোন নিঃসরণ ভারসাম্য হারাবে।
মেলাটোনিন অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে। মেলাটোনিনের পরিমাণ বাড়লে কর্টিসল কমে আসে। থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতার একটি অন্যতম কারণ রাতে না ঘুমানো।
আবার গ্রোথ হরমোনও রাতের প্রথম প্রহরে ঘুমন্ত অবস্থায় সবচেয়ে বেশি নিঃসৃত হয়। তাই বাড়ন্ত বাচ্চাদের রাতের ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৫. প্রকৃতির কাছে না যাওয়া
সেরোটোনিন একধরনের ‘হ্যাপি হরমোন’ মেজাজ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও ঘুম, হজমক্ষমতা, শিক্ষা, ক্ষুধা, এমনকি শরীরের মেটাবলিজম সিস্টেম সচল রাখতেও সহায়তা করে সেরোটোনিন। সূর্যের আলোতে বা প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকলে, যোগব্যায়াম করলে এই হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। তাই প্রকৃতির কাছে না যাওয়া মানে হরমোনের ভারসাম্যহীনতাকে আমন্ত্রণ জানানো!
৬. হাস্যোজ্জ্বলতা থেকে দূরে থাকা
‘রামগরুড়ের ছানা,
হাসতে তাদের মানা’
না, হাসতে কোনো মানা নেই। কেননা হাসলেই এন্ডোরফিন নিঃসৃত হয়। হাসলে আয়ু বাড়ে এবং হার্ট ভালো থাকে, ওজনও কমে, হজমক্ষমতা বাড়ে,সেই সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বৃদ্ধি পায় । আর এসবের সঙ্গে ভালো থাকে আমাদের মন। তাই মন খুলে হাসুন।
এছাড়াও গান শুনলে, সিনেমা দেখলে, ব্যায়াম করলে, হাঁটলেও এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে।
এস আই/
Discussion about this post