বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, আমরা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান এবং ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে একতাবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করেছি। কিন্তু অভ্যুত্থান পরবর্তীকালে রাষ্ট্র সংস্কার ও পুনর্গঠনের সময় বিভাজন তৈরি হয়েছে। আমরা একতাবদ্ধ হয়ে যেভাবে আন্দোলন করেছি, ঠিক তেমনি এখনও আমাদেরকে একতাবদ্ধ থেকে রাষ্ট্র সংস্কার ও মেরামত করতে হবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা জানান।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনানন্দ দাস কনফারেন্স কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দুর্নীতি, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিকদের অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে আলোচনা করা হয়।
আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ফ্যাসিস্ট শুধু শেখ হাসিনাই ছিল না। বরং ফ্যাসিস্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও বিভিন্ন জায়গায় বিরাজমান ছিল। আমাদের এগুলো উপড়ে ফেলতে হবে। সংস্কার করতে হবে।
তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় যেমন আমরা দেখিনি আমাদের পাশের লোকটি হিন্দু নাকি মুসলিম, আওয়ামী লীগ, বিএনপি নাকি জামাত-শিবির, তেমনইভাবে রাষ্ট্র সংস্কারেও আমাদেরকে একত্রিত থাকতে হবে। ২৪ -এর গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের আগে আমাদের মাঝে কোনো ধরনের বিভেদ ছিল না। যখন রাষ্ট্র সংস্কারের ও পুনর্গঠনের প্রশ্ন এসেছে তখনই বিভাজন তৈরি হয়েছে। যেমন হয়েছিল ৪৭ এর পর মাত্র ৫ বছরের ব্যবধানে, ঠিক তেমনি ৭১ সালেও। তাই, আন্দোলনে সম্পৃক্ত সবাই একযোগে জনসাধারণের কল্যাণে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজানা অফিফা অদিতি, এমএ সাইদ, রাইয়ান ফেরদৌস, বদরুন্নেসা কলেজের সিনথিয়া জাহিন আয়েশা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসিবুল হোসাইন শান্ত, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মোবাশ্বেরা করিম মিমি, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৌহিদ আহমেদ আশিক, ঢাকা কলেজের জিহাদ হোসেন ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদুল ইসলাম শাহেদ, সুজন মাহমুদ, সিরাজসহ সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাইয়ান ফেরদৌস বলেন, একতাবদ্ধ বাঙালি যদি বিভাজন হয়, তাহলে আমাদের স্বাধীনতা ব্যাহত হবে। তাই আমাদের এক থাকতে হবে। ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন ও আহত হয়েছে তাদের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। আমাদের আন্দোলনে স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্র পুনর্গঠন ও মেরামত করা। আমরা একটি নতুন রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তুলতে চাই।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৃহত্তর বরিশাল জোনের বিভাগীয় ছাত্র-জনতা মৈত্রী সফরের প্রতিনিধি দল আসেন বরিশাল বিভাগে। একইসঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক এর মতবিনিময় সভা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মতবিনিময় সভাটি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
এ ইউ/
Discussion about this post