প্রতি বছর সরকারের ব্যয় হচ্ছে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। অথচ গত চার বছরে রেমিট্যান্স বাড়েনি প্রত্যাশিত মাত্রায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আর্থিক সংকটের এই সময়ে এই ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার প্রয়োজন নেই। বরং হুণ্ডি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
কাজের সন্ধানে প্রতি বছরই প্রবাসে পাড়ি জমাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। তাদের শ্রম আর ঘামে আয় করা বিদেশি মুদ্রা সমৃদ্ধ করছে দেশের অর্থনীতিকে। বিএমইটির হিসাবে, সবশেষ ২০২৩ সালে বিভিন্ন দেশে গেছেন ১৩ লাখের বেশি শ্রমিক। এছাড়া চলতি বছরের প্রথম চার মাসেও সেই সংখ্যা প্রায় সোয়া তিন লাখ। কিন্তু তার প্রত্যাশিত প্রতিফলন পড়ছে না রেমিট্যান্স প্রবাহে।
এমন বাস্তবতায় বৈধ পথে প্রবাহ বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে পাঠানো অর্থের ওপর আড়াই শতাংশ প্রণোদণা ঘোষণা করে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, তার পরের অর্থবছরে দেশে আসে ২ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। যার বিপরীতে প্রণোদনা বাবদ ব্যয় হয় প্রায় সোয়া পাঁচ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু পরের দুই অর্থবছরে একই হারে এই ব্যয় অব্যাহত থাকলেও দেশে আসেনি বাড়তি রেমিট্যান্স। এমন অবস্থায় ডলারের দর প্রায় বাজারমুখী করার পরও এই প্রণোদনা অব্যাহত রাখার যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমি তুলনা করি, একটি নদীতে বালতি দিয়ে পানি দেয়ার মত। আমি পানি ঢালতে পারবো কিন্তু পানির পরিমাণের কোনো পার্থক্য হবে না। এই অর্থ একদমই ওয়েস্ট অব মানি। এবং কিছু লোক এর থেকে সুবিধা নিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ২০১৬-১৭ থেকে পরের তিন অর্থবছরে কোনো ধরনের প্রণোদনা ছাড়াই রেমিট্যান্স প্রবাহ এক লাখ কোটি থেকে উঠে যায় দেড় লাখ কোটি টাকার ওপরে। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শুধু প্রণোদনা দিয়েই প্রবাসীদেরকে আকৃষ্ট করা যাবে না। বরং টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি কঠোর উদ্যোগ নিতে হবে হুণ্ডি বন্ধে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম)- এর সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, যারা পাচারকারী তারা বেশি দামে ফরেন কারেন্সি কিনে আবার পাঠিয়ে দেয়। সেই প্রক্রিয়া ঠেকাতে এই ইনসেনটিভটা দেয়া হয়েছে। আমাদের রেমিটেন্স যদি বাড়াতে হয় তাহলে প্রণোদনা একটি রুট হতে পারে। তবে সবচে ভালো হবে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই যদি অফিসিয়ালিভাবে টাকা পাঠায়।
সূত্র – চ্যানেল টুয়েন্টিফোর
এ এস/
Discussion about this post