২০২৪ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গৃহহীন ১ হাজার ৫০০ পরিবারকে ঘর নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। এর অংশ হিসেবে সোমবার (২৬ মে) শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ হলরুমে ১৬০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে নির্মিত সেমিপাকা ঘরের প্রতীকী চাবি হস্তান্তরের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের সূচনা করেছে ফাউন্ডেশন।
সোমবার সকাল ১০টায় শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলা পরিষদ হলরুমে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ঘর হস্তান্তর প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে উপকারভোগীদের হাতে নির্মিত ঘরের প্রতীকী চাবি তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইগাতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল, স্থানীয় ওলামায়ে কেরামসহ আরও অনেকে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশরাফুল আলম রাসেল আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের এই মহতী উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন দায়িত্বশীলতার সাথে দুর্যোগকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সারাদেশে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি শায়খ আহমাদুল্লাহকে ধন্যবাদ জানিয়ে সবসময় ফাউন্ডেশনের পাশে থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
চব্বিশের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয় আসে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
গৃহহারাদের পূনর্বাসনের আওতায় মোট ১ হাজার ৫০০টি সেমিপাকা ঘর নির্মাণের কাজ অনেকটা সম্পন্ন করেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
শায়খ আহমাদুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, ‘দরপত্রের মাধ্যমে কয়েকটি কনস্ট্রাকশন ফার্মকে এই প্রকল্পের ঘর নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তবে নির্মাণসামগ্রী কেনা ও প্রতিটি ঘরের নির্মাণকাজ তদারকি করেছেন আমাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। এই প্রকল্পের প্রতিটি ঘর আধাপাকা। যাতে রয়েছে দুইটি কক্ষ ও একটি বারান্দা।
পুরো ঘরের সাইজ সাড়ে ১৯ ফুট বাই সাড়ে ১৮ ফুট। প্রতিটি কক্ষের সাইজ ১১ ফুট বাই ৯ ফুট। প্রতিটি ঘরে একটি দরজা পাঁচটি জানালা রয়েছে।
ঘরের চালে ইন্ডাস্ট্রিয়াল টিন ব্যবহার করা হয়েছে, যা সহজে নষ্ট হবে না। টিনের নিচে গরম ও শীত প্রতিরোধক ফোম এবং মরিচা প্রতিরোধকের জন্য জিপি বক্সও ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও ইঁট, বালি এবং সিমেন্ট ও রডসহ যাবতীয় মালামাল এ গ্রেডের দেওয়া হয়েছে। জানালায় ২২গেজের মোটা শীট এবং ৩ মিলি পুরত্বের ফ্রেম বার ও এঙ্গেল ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া জানালায় ১০ মিলি থিকনেসের স্কয়ার বারের গ্রীল ব্যবহার করা হয়েছে।
শেরপুরের পর শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য জেলাতেও গৃহহারাদের কাছে তাদের ঘর বুঝিয়ে দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।’
একই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে তিনি আরও জানান, একই মডেলে এরইমধ্যে ফেনীতে ২৯০টি, লক্ষীপুরে ২৬০টি, নোয়াখালীতে ২৪০টি, কুমিল্লাতে ২৫০টি, ময়মনসিংহে ১০৫টি, চাঁদপুরে ৫০টি, কুড়িগ্রামে ৬৫টি, লালমনিরহাটে ২০টি, নেত্রকোনায় ২৫টি এবং চট্রগ্রামের মিরসরাই ও ফটিকছড়িতে ৩৫টি ঘর নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ জানান, ২০২৪ এ বন্যা দুর্গতদের জন্য ৪ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করি আমরা। এ ছাড়াও বাসস্থান, কৃষি ও ব্যবসায় ক্ষতির আওতায় বন্যা দুর্গত জেলাগুলোতে মোট ৮ হাজার ৯৭০টি পরিবারের মাঝে ৩০ কোটি ১৯ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
এম এইচ/
Discussion about this post