নাগরিকত্ব আইনসহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী গণভোট প্রয়োজনীয় ভোটার উপস্থিতি না থাকায় বাতিল হয়ে গেছে ইতালিতে। মাত্র ৩০.৬ শতাংশ ভোটার তাদের মতামত দেওয়ায় এই বহুল প্রত্যাশিত গণভোটটি বৈধতা পায়নি। সোমবার (৯ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিবাসীদের নাগরিকত্বের আবেদন সময়সীমা ১০ বছর থেকে কমিয়ে ৫ বছর করা, শ্রমিকদের কর্মস্থলে সুরক্ষা বৃদ্ধি, এবং দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল এই গণভোটে। আদালতের নির্দেশে এই গণভোট আয়োজন করা হয়। তবে ইতালির নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, কোনো গণভোট বৈধ হতে হলে ভোটার উপস্থিতি কমপক্ষে ৫০ শতাংশ হতে হয়।
এই গণভোটে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় হতাশ হয়েছেন দেশটিতে বসবাসরত প্রায় ২৫ লাখ বিদেশি নাগরিক। তাদের অনেকেই দ্রুত নাগরিকত্ব লাভের আশা করছিলেন। কিন্তু ডানপন্থি প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সরকার শুরু থেকেই এসব প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
বাংলাদেশিসহ অনেক অভিবাসীর অভিযোগ, কট্টর ডানপন্থি দলগুলোর বিদেশবিরোধী প্রচারণাই এই ফলাফলের অন্যতম কারণ।
এই গণভোট আয়োজনের পেছনে মূল ভূমিকা ছিল বামপন্থি ও মধ্যপন্থি রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং একটি প্রধান শ্রমিক ইউনিয়নের। তারা সরকারের বিরোধিতা সত্ত্বেও এই প্রস্তাবগুলো জনসমক্ষে আনতে সক্ষম হয়।
প্রস্তাবের সমর্থকদের মতে, এই সংস্কার কার্যকর হলে ইতালিতে থাকা বিপুল সংখ্যক বিদেশি নাগরিক উপকৃত হতেন এবং দেশটির নাগরিকত্ব আইন আরও মানবিক ও আধুনিক হয়ে উঠতো। এতে ইতালির আইন ইউরোপের অন্যান্য দেশ, যেমন জার্মানি ও ফ্রান্সের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতো।
উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৭৪ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ৯টি সংস্কার-ভিত্তিক গণভোটের মধ্যে ৮টিতেই ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রয়োজনীয় মাত্রার বেশি। তবে ১৯৯৫ সালের পর থেকে অনুষ্ঠিত ৩৪টি গণভোটের মধ্যে ৩০টিই বাতিল হয়েছে কম ভোটার উপস্থিতির কারণে।
এ ইউ/
Discussion about this post