ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতার কারণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলের বিয়ে স্থগিত হয়ে গেছে। টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগামী সোমবার (১৬ জুন) প্রধানমন্ত্রীর পুত্র এভনের নেতানিয়াহুর বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। তবে চলমান ভয়াবহ সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠান স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন।
খবরে বলা হয়েছে, চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে এই বিয়ের আয়োজনকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিরোধীরা বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত না হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে এই আয়োজনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল।
গত শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল ইরানে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালায়, যার লক্ষ্য ছিল দেশটির পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি, ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্র এবং শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। এর পাল্টা জবাবে ইরানও ইসরায়েলের বেশ কিছু এলাকা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে, যা ইসরায়েলজুড়ে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করে। এই হামলার সময় বোমা হামলার সাইরেন বেজে ওঠে এবং সাধারণ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যায়।
জানা গেছে, তেল আবিব থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উত্তরে কিবুৎজ ইয়াকুমে এভনের নেতানিয়াহুর বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এই উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল এবং সোমবার কিবুৎজ ইয়াকুমের ১.৫ কিলোমিটার রেডিয়াস পর্যন্ত আকাশসীমাও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে শেষ পর্যন্ত নেতানিয়াহুকে বিয়ের অনুষ্ঠান স্থগিত করতে বাধ্য হতে হয়।
ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, ইরানের হামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জন নিহত এবং ১৮০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া, অন্তত ৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে; তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকতে পারেন।
এদিকে, ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় তেহরান পারমাণবিক আলোচনা বাতিল করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত থামানোর একমাত্র কূটনৈতিক উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছিল। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ইরান যা দেখেছে, সেটি কিছুই না। আসল প্রতিশোধ আসবে আগামী দিনে।” দুই দেশের এমন অনমনীয় অবস্থানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছে, তবে মাঠের পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে।
এম এইচ/
Discussion about this post