এবার ইরানে বোমা হামলা হয়েছে। বুধবার (৩ জানুয়ারি) দেশটির ইসলামি বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর মেজর কাসেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বুধবার (৩ জানুয়ারি) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহত। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর কেরমান শহরে কবরস্থানে সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে বহু ইরানি জড়ো হয়েছিলেন। তখনই হঠাৎ করে বিকট শব্দে দুটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন।
টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে কাজ করছেন রেড ক্রিসেন্টের কর্মীরা। ইরানের কিছু সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, বিস্ফোরণে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। কেরমান প্রদেশের রেড ক্রিসেন্টের প্রধান রেজা ফাল্লা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, আমাদের উদ্ধারকারী দলগুলো আহতদের সরিয়ে নিচ্ছে… তবে ভিড়ের কারণে সেখানে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এটি এখনও পরিষ্কার নয় যে বিস্ফোরণটি গ্যাস সিলিন্ডার নাকি সন্ত্রাসী হামলার কারণে হয়েছে।
কাসেম সোলাইমানি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর মেজর জেনারেল ছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি কুদস বাহিনীর বহির্দেশীয় সামরিক ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের একজন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাকে অনেকে দেশটির ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির ডানহাত ও ইরানের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে জানতেন।
১৯৯০ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধ চলাকালে ৪১তম বিভাগের অধিনায়ক ছিলেন কাসেম সোলাইমানি। এরপর বেশ কয়েকটি ঐচ্ছিক অভিযানও পরিচালনা করেন তিনি। এছাড়া সাদ্দামবিরোধী শিয়া ও ইরাকের কুর্দি গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক সহায়তা প্রদান এবং পরবর্তীতে হিজবুল্লাহ ও হামাসকেও সহায়তা করেছেন। এছাড়া ২০১২ সালে সোলাইমানি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় বিশেষত ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্টের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে সিরিয়ার সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করেন। সোলাইমানি ২০১৪-২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক এবং লেভান্টের (আইএসআইএল) বিরুদ্ধে অগ্রসর হওয়া সম্মিলিত ইরাকি সরকার এবং শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীর কমান্ডেও সহায়তা করেছিলেন।
সোলেইমানি ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি টার্গেট করা বিমান হামলায় নিহত হন। তার সাথে ফোর্সের আরও কয়েকজন সামরিক সদস্যরা নিহত হয়। সূত্র – আলজাজিরা
Discussion about this post