৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সেই হামলা ঘুনাক্ষরেও টের না পাওয়ায় প্রশ্নবানে জর্জিরিত হয় ইসরায়েলের গোয়েন্দা বিভাগ। এবার সামনে এলো নতুন এক খবর।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলাহয়, হামাসের ৭ অক্টোবরের অভিযান পরিকল্পনার নথি এক বছর আগেই হাতে পেয়েছিল ইসরাইল। কিন্তু এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হামাসের পক্ষে কখনো সম্ভব হবে না ভেবে তখন কোনো পদক্ষেপ নেননি ইসরাইলি সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
এমনকি অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দাদের সতর্কতার মুখেও এটিকে উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনা মনে করে অনেকটা তাচ্ছিল্যের সাখে উড়িয়ে দিয়েছিলেন তারা। বিভিন্ন নথি, ইমেইল ও সাক্ষাৎকার পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, হামলা সংক্রান্ত ৪০ পৃষ্ঠার একটি নথি পেয়েছিল ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। যার কোড নাম ‘জেরিকা ওয়াল’। সেই নথির শুরুটা ছিলো কুরআন শরিফের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে। যাতে লিখা ছিল ‘দরজা দিয়ে প্রবেশ করে প্রতিপক্ষকে অবাক করে দিতে পারলেই জয়ী হওয়া যাবে। প্রাথমিক অভিযানের পর বিভিন্ন বিবৃতি ও ভিডিওগুলোতে একই উদ্ধৃতি ব্যবহার করে ফিলিস্তিনিরি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।
অবশ্য ওই নথিটিতে হামাস কবে অভিযান চালাবে বা চালাতে পারে তার কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ ছিল না। তবে গাজা উপত্যকার চারপাশের দুর্গগুলোকে পরিকল্পিত অভিযানের আঁতুরঘর হিসাবে দেখানো হয়েছে। আর এই পরিকল্পনা অনুযায়ী হামাস ‘নির্ভুল’ অভিযান চালিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।
সেই নথি থেকে জানা যায়, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির পরিকল্পনা ছিলো ইসরায়েলের কয়েকিটি শহর দখলে নেওয়া। এমনকি, তাদের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি ও সদর দপ্তরে অভিযান চালানোর তথ্যও উল্লেখ ছিল।
নথিতে আরও ছিল হামলার শুরুতে রকেট ছোড়া, সীমান্তে নিরাপত্তা ক্যামেরা নিষ্ক্রিয় করতে ড্রোনের ব্যবহার, ইসরাইলি সীমান্তে প্রবেশে প্যারাগ্লাইডার এমনকি মেশিনগান ব্যবহারের তথ্য। এছাড়া এতে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান ও সংখ্যা সম্পর্কেও নিখুঁত ও বিস্তারিত তথ্য উঠে আসে।
অবশ্য এই নথি সম্পর্কে ইসরায়েল বা ফিলিস্তিনির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এই হামলার কারণ হিসেবে হামাস জানায়, তারা দশকের পর দশক ধরে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। তাই প্রতিবাদ জানাতেই চালানো নজির বিহীন হামলা।
Discussion about this post