ইসলামের পঞ্চভিত্তির গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো রোজা। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার উপর অন্যতম মৌলিক ফরজ। তার আনুগত্যে সকৃতজ্ঞ হৃদয়ে আমরা রমজান মাসে সে ফরজ আদায় করি।এছাড়া বাকি মাসগুলোতে নফল, ওয়াজিব ও অন্যান্য রোজা আদায় করা যায়।
তবে বছরের এমন পাঁচটি দিন রয়েছে, যে দিনগুলোতে রোজা রাখা নিষিদ্ধ। দিনগুলো হলো, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দুই দিন এবং ঈদুল আজহার পরের আইয়েমে তাশরিকের তিন দিন তথা এগারো জিলহজ থেকে তেরো জিলহজ পর্যন্ত। হাদিসে পাকে এ দিনগুলোতে রোজা রাখতে রাসুল সা. নিষেধ করছেন।
কত হাদিসে রোজা না-রাখার কারণ স্পষ্ট কিংবা প্রচ্ছন্নভাবে উল্লেখ রয়েছে। শরিয়তের দৃষ্টিতে শাওয়াল মাসের প্রথম দিন রোজা রাখা হারাম। তার মানে ঈদুল ফিতরের দিন রোজা রাখার কোনো বৈধতা নেই। কেননা রমজান মাসে এক মাস সিয়াম সাধনার পর রোজা পালনকারীদের জন্য শাওয়াল মাসের প্রথম দিন হচ্ছে আনন্দ ও উৎসবের দিন।
কিন্তু এ দিনটিও যদি রোজা পালন করা হয়, তাহলে তারা আর আনন্দ অনুভব করতে পারবে না। তাই ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সা. ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দুই দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন। মুসলিম শরিফ; হাদিস: ১১৩৮।এমনিভাবে অসংখ্য হাদিসে ঈদুল আজহার পরবর্তী আইয়্যেমে তাশরিকের তিনদিন রোজা রাখা নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে।
হযরত আবু দাউদের এক হাদিসে এসেছে, হযরত উকবা ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, আরাফার দিন, ঈদুল আজহার দিন ও আইয়্যেমে তাশরিকের দিনগুলো আমাদের মুসলমানদের ঈদের দিন। এবং তা পানাহারের দিন। আবু দাউদ; হাদিস: ২৪১৯। এই দিনগুলোতে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি বিশেষ খাবার-দাবার ও মেহমানদারির ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। মেহমানের সম্মানে রোজা না-রেখে খাবার গ্রহণ করাই হলো নিয়ম। আর মেজবান যতো বড় হয়ে থাকেন, তার স্তরানুযায়ী মেহমানদারি গ্রহণ না-করা ততো কঠিন হয়ে থাকে।
এজন্য ইসলামে এদিনগুলিতে রোজা রাখা হারাম সাব্যস্ত করা হয়েছে। অনুরূপভাবে তাশরিকের দিনগুলোতে রোজা রাখাও হারাম। উম্মে হানির আজদকৃত দাস আবু মুর্রা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি আব্দুল্লাহ বিন আমরের সাথে তার পিতা আমর বিন আসের কাছে যান। তিনি তাদের দুইজনের জন্য খাবার পেশ করে বলেন: খাও। সে বলল: আমি রোজা রেখেছি। তখন আমর (রা.) বললেন: খাও; রাসুল (সা.) এ দিনগুলোতে আমাদের রোজা না রাখার নির্দেশ দিতেন এবং রোজা রাখতে নিষেধ করতেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৪১৮)
এস আই /
Discussion about this post