একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থেকে আয়া পর্যন্ত সবাই একই পরিবারের। সবচেয়ে মজার বিষয় হল প্রতিষ্ঠানটিতে একমাত্র ইসলাম ধর্মের একজন শিক্ষক মুসলিম। তিনি ছাড়া বাকি সবাই সনাতম ধর্মের।
অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসন আমলে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এমন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছেন। বলছি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচন্ডি ইউনিয়নের কবিরাজের বাজারে অবস্থিত কিশামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়ের কথা।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কিসামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রায় এক এক জমির উপরে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করা হয় ২০০২ সালে। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে জমিদাতা কুলোদা মোহন রায়কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন করা হয়। তৎকালীন সভাপতি কুলোদা মোহল রায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবে অন্তত কুমারকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেন। প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার নিয়োগ পাওয়ায় পর প্রতিষ্ঠানে নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ভাই, স্ত্রী, ভাইয়ের স্ত্রীসহ পরিবারের সকলকে নিয়োগ পাইয়ে দেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কুলোদা মোহন রায়ের মৃত্যুর পর প্রধান শিক্ষক নিজের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির ছেলে বিমল চন্দ্র রায়কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্বে নিয়ে আসেন। বিপুল চন্দ্র কমিটির সভাপতি হওয়ার পর সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক দুজনে মিলে দুই পরিবারের লোকজনদের নিয়োগ প্রদান করেন। বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক থেকে শুরু করে আয়া পর্যন্ত মোট ১৮ জন কর্মরত রয়েছেন। তার মধ্যে শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের একজন শিক্ষক ছাড়া বাকিরা সকলেই সনাতন ধর্মের। এর মধ্যে ১২ জন প্রধান শিক্ষকের পরিবারের।
গত ২ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমারের র্দীর্ঘ ১৬ বছরে কিসামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়টিকে পরিবার তন্ত্রের রূপান্তরিত করার একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে পরে। এ বিষয়টি নিয়ে সমাজের সকল স্তুরের মানুষের মাঝে অসন্তোষ দানা বাঁধে।
বিদ্যালয়টির সহকারী প্রধান শিক্ষক ববিতা রানী রায় জানান, আমার স্বামী এই বিদ্যালয়ের প্রধান। আমার ভাসুর অন্নদা মোহন রায়। দেবর রঘুনাত চন্দ্র রায় ও তুলারাম রায়। তারা আপন ভাই। ভাইয়ের স্ত্রী ভাগিনা, ভাগিনার বউ নিয়োগ পেয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমারের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমি যা করেছি নিয়ম মেনে করেছি। আপনার নিয়মের মধ্যে বাইরের কোনো প্রার্থী নিয়োগের জন্য উপযুক্ত ছিল কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমাকে bd news bangla তার কার্যালয়ে আমাকে ডাকছেন বলে তিনি দ্রুত চলে যান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফ-উজ-জামান সরকার বলেন, আমি এখানে নতুন। এ বিষয়ে কিছু জানি না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া শিক্ষকের নামের তালিকা দেখে প্রধান শিক্ষককে ডেকেছিলাম। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক
এস এম/
Discussion about this post