দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারছে না দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি। আইনি জটিলতা ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উদ্যোগের অভাবেই ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রবাসীরা।
এ ছাড়া পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান শুধু দেশে বসবাসরত নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য হওয়ায় উপেক্ষিত থাকছেন প্রবাসীরা। এবারও এ প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিবের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে ইসি। জবাবে মন্ত্রণালয় বলেছে, ভোট দেওয়ার উদ্যোগ নিতে না পারলেও দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে ভোটের আগে ও ভোটের দিন পর্যন্ত ভোটের তথ্য নিয়ে প্রচার চালাবে দূতাবাসগুলো।
এদিকে, আইনি ফাঁদে আটকে গেল এবারও পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান কার্যক্রম। জটিলতা কাটাতে দরকার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ (আরপিও) সংশোধন। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় আপাতত এ আইনে সংশোধনী আনার সুযোগ নেই। ফলে বিদেশে (প্রবাসী) থাকা নাগরিকরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পাচ্ছেন না এবারও।
সংবিধানে সব নাগরিকের ভোটের অধিকারের কথা বলা হলেও স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫২ বছরে দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশির মৌলিক এই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ নিজ দেশের প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটি না থাকায় দেশে ও প্রবাসে অন্তহীন ভোগান্তির শিকার হন প্রবাসীরা।
মোট জনসংখ্যার দিক থেকে প্রবাসীর সংখ্যা ৮ শতাংশের ওপরে। সেই হিসাবে বাংলাদেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের প্রতিটিতে গড়ে প্রায় ৫০ হাজার ভোটার প্রবাসে কর্মরত। প্রবাসীদের ভোটের অধিকার দেওয়ার জন্য নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও আজও তা কার্যত আলোর মুখ দেখেনি। অথচ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদে প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে আসন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসীদের দেশের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে হলে তাদের প্রথমে ভোটের অধিকারের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সই এখন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান উৎস। ভোটের অধিকার প্রদানের কার্যকর ও প্রায়োগিক উদ্যোগ কোনও সরকারই নেয়নি। পরীক্ষামূলক হলেও এবারের নির্বাচনে কয়েকটি দেশে প্রবাসীদের ভোটাধিকার শুরু করা জরুরি
Discussion about this post