কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে ভারত সরকার। এরইমধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে খালিস্তানপন্থী নেতা গুরুপ্রীত সিং পান্নুনের একটি ভিডিও বার্তা। তিনি বলেন, ‘‘দুই কোটি শিখ পাকিস্তানের পাশে ইটের প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে থাকবে।’’ পান্নুনের এই ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত গুরুপ্রীত পান্নুন দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীন খালিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ভারত সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী নীতির মাধ্যমে শিখ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের অভিযোগ করেন। পেহেলগাম হামলার প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, এটি ছিল একটি রাজনৈতিক ‘নীলনকশা’, যেখানে বিজেপি নিজে হামলা ঘটিয়ে ভোটের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে।
পান্নুন বলেন, ভারত যদি পাকিস্তানে হামলা করে, তাহলে পাঞ্জাবের মাটি দিয়ে সেনাবাহিনীকে যেতে দেওয়া হবে না। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘আক্রমণকারীরা বাঁচে না সে ইন্দিরা গান্ধী হোক, নরেন্দ্র মোদি হোক কিংবা অমিত শাহ।’’ তিনি মোদি, অজিত দোভাল, অমিত শাহ এবং এস জয়শঙ্করের বিচারেরও দাবি জানান।
এদিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ভারত সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। পাকিস্তানের পাশে অবস্থান নিয়েছে চীন, একইসঙ্গে ইরান এবং বাংলাদেশের কিছু প্রভাবশালী মহলের পক্ষ থেকেও পাকিস্তানের প্রতি সহানুভূতির বার্তা মিলেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তিত কূটনৈতিক সমীকরণ মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় আড়াই কোটি শিখ ধর্মাবলম্বীর একটি বড় অংশ ভারতে বাস করে। ১৯৮০’র দশক থেকে খালিস্তানপন্থী শিখরা স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ভারত সরকার এই আন্দোলন বরাবরই কঠোরভাবে দমন করেছে, যার ফলে বহু সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
২০২৩ সালে কানাডায় খুন হন খালিস্তানপন্থী নেতা হরপ্রীত সিং নিয়াজার। পশ্চিমা গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে আসে, এই হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। একইভাবে, আমেরিকায় পান্নুনের ওপর হত্যাচেষ্টার নেপথ্যেও ভারতের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
ভিডিও বার্তায় পান্নুন বলেন, ‘‘পাকিস্তান মানে পবিত্রতা, বিশুদ্ধতা। অথচ ভারত সেই দেশকে চোখ রাঙাচ্ছে, যখন নিজের ভেতরেই ধর্মনিরপেক্ষতার নামে সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন চলছে।’’
এম এইচ/
Discussion about this post