মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তান বাংলাদেশ থেকে ২০২২ সাল নাগাদ সর্বনিম্ন ৪০০ ডলার থেকে ১ হাজার ২০০ ডলার বেতনে দেড় হাজার দক্ষ কর্মী নেয়ার কথা ছিল। প্রথম দফায়, ২০২০ সালে চার্টার্ড ফ্লাইটে ২৩৯ জন কর্মী পাঠানো হয় দেশটিতে। কিন্তু দেখা যায়, সেসব কর্মী সংশ্লিষ্ট কাজে যথেষ্ট দক্ষ নন। এরপর বাংলাদেশ থেকে আর কোনও কর্মীই নেয়নি দেশটি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২০১৭ সালে মাল্টার শ্রমবাজার চালু হয়। ২০২১ সালে প্রায় ২০ হাজারের বেশি দক্ষ শ্রমিকের মাল্টায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিও হয়। তবে বাংলাদেশে দেশটির কোন কনস্যুলেট কিংবা দূতাবাস না থাকায় ভিসার জন্য বাংলাদেশি কর্মীদের যেতে হয় নয়াদিল্লিতে।
একই অবস্থা পোল্যান্ড, সার্বিয়া, রোমানিয়া, কসোভো, বসনিয়ার ক্ষেত্রে। কৃষি, অবকাঠামো নির্মাণ, বিভিন্ন সেবাখাতে বাংলাদেশি কর্মীদের চাহিদা তৈরি হলেও, দক্ষ কর্মীর অভাব আর ভিসা জটিলতায় সময়মতো কর্মীর যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত যেসব কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে, তার ৯১ শতাংশই গেছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সাতটি দেশে।
অভিবাসন সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, প্রতিবেশী দেশ ভারত যেখানে তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষ কর্মী তৈরি করছে সেখানে, ঘুরে ফিরে মধ্যপ্রাচ্যের বৃত্তেই বন্দি বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা। ২০১৮ সালে ইউরোপসহ নতুন করে ৫৩টি দেশে কর্মী পাঠানোর সম্ভাবনা নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিএমইটি যৌথ গবেষণার উদ্যোগ নিলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমদের দক্ষ জনশক্তি তৈরির ভিশন সেভাবে নিতে পারি। অন্য শ্রমবাজারে একজন কর্মী পাঠালে যে সুবিধা পায়, মধ্যেপ্রাচ্যের ৫০ কর্মী পাঠালে একই সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। অন্য দেশগুলোতে কনসুলেট অফিস নেই। ভারত থেকে ভিসা নিতে হয়। যেখানে ভারতের ভিসা নিতেই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।’
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, ‘অন্য দেশের সরকার আমাদের কাছে মানুষ চাচ্ছে, কিন্তু সেভাবে নিতে পারছে না। এক্ষেত্রে দুর্বল শ্রম কূটনীতিকে অশনিসংকেত। সম্ভাবনাময় বাজার ধরতে না পারলে বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়বে দেশের অভিবাসন খাত।’
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীর দাবি, ‘ইউরোপের বাজার ধরতে কাজ চলছে। এতে আরও বেশি কর্মী পাঠানো যাবে। তবে ধীরগতিতে চলছে কাজ।’
এ এস/
Discussion about this post