ঘূর্ণিঝড় রেমালের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে কলকাতার আকাশপথে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। রোববার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত শহরটির আকাশপথে বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া সব মিলিয়ে মোট ২১ ঘণ্টা কলকতা বিমানবন্দরে কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে।
কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সব অংশীজনের সঙ্গে একটি বৈঠক করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রবল বাতাস ও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় বৈঠক থেকে কলকাতার আকাশপথে বিমান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ ছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল তাণ্ডব চালাতে পারে এমন আশঙ্কায় হাওড়া-শিয়ালদহ থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ফেরি চলাচলেও সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে। এসবের মধ্যে এবার আকাশপথেও বাড়তি সতর্কতার বিষয়টি সামনে এলো।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা আরও পরিণত হয়েছে। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি সামান্য উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে শুক্রবার নিম্নচাপে পরিণত হয়, যার অভিমুখ ছিল বাংলাদেশের দিকে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর এখন উত্তাল। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ অতি প্রবল আকার ধারণ করে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে আবহাওয়াবিদ মো. আজিজুর রহমান জানান, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপটি সন্ধ্যার পরই ঘূর্ণিঝড় রেমালে রূপ নিতে পারে। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঝড় ৫০ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাতাসের গতিবেগ আরও বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আজ সন্ধ্যা থেকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে পড়তে শুরু করবে। আর মধ্যরাত থেকে পুরোপুরি প্রভাব পড়া শুরু হতে পারে। সেজন্য সমুদ্র বন্দর সমূহে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নিম্নচাপটি এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আরও ঘনীভূত হয়ে শক্তিশালী হচ্ছে।
শনিবার (২৫ মে) আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৭) বলা হয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮.২০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৮০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ (২৫ মে) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৫০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৩৫ কি.মি.দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
এ এস/
Discussion about this post