কলকাতার কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে বাংলাদেশ বইমেলা-২০২৩। এবার এই বইমেলা ১১তম বছরে পা দিলো। কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশন, বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি ঢাকার উদ্যোগে বইমেলা চলবে আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই মেলা চলবে। ১০ দিনের এই মেলায় বাংলাদেশের ৬৫টি শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে- যার মধ্যে অন্যতম হল অন্বেষা প্রকাশন, আহমেদ পাবলিশিং হাউস, মাওলা ব্রাদার্স, অনিন্দ্য প্রকাশ, নালন্দা, বাতিঘর, উজান, কথাপ্রকাশ, মাওলা ব্রাদার্স, দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, কাকলী প্রকাশনী প্রমুখ।
এছাড়াও বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে মেলাপ্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছে ‘হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু’ স্টল। মেলায় বই বিক্রির পাশাপাশি প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকছে সেমিনার, কবিতা পাঠ এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। যেখানে অংশ নেবেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা।
এদিন বিকেলে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যালয় ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি জনাব মফিদুল হক। অন্যদের মধ্যে ছিলেন প্রকাশক ও লেখক ত্রিদীব চট্টোপাধ্যায়, সুধাংশু শেখর দে, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল সমিতির সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য শিল্পী ফরিদা পারভীন।
উল্লেখ্য কলকাতা’য় ‘বাংলাদেশ বইমেলা’র যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে কলকাতার গগনেন্দ্র প্রদর্শনশালায়। পরপর তিন বছর সেখানে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ২০১৪ সালে এই বইমেলা রবীন্দ্র সদনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে স্থানান্তরিত হয়। আর সেই সময় থেকেই মেলায় যোগ হয় নতুন মাত্রা। শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এটি সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় পরিণত হয়। তিন বছর সেখানে এই বইমেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ২০১৭ সালে বইমেলা স্থানান্তরিত করা হয় মোহর কুঞ্জে। এরপর ২০১৯ সাল পর্যন্ত পরপর তিনবার সেখানে এই বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর করোনার কারণে ২০২০, ২০২১ সালে এই মেলা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ২০২২ সালে বইমেলার আসর বসে কলকাতার কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণে।
গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এই বইমেলার আয়োজনের ফলে কলকাতায় বাংলাদেশের বইয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, বাংলাদেশের লেখকদের পরিচিতি বাড়ছে একই সঙ্গে বাংলাদেশের বইয়ের বাজারও প্রসারিত হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এই বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম।
Discussion about this post