সোমালিয়া ! আফ্রিকার ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক দেশ। ষাটের দশকে ‘আধুনিক সোমালিয়া’র কাহিনী ছিল স্বাধীনতা, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্রের। শান্তি ও সমৃদ্ধিতে আফ্রিকার সুইজারল্যান্ডও বলা হতো সোমালিয়াকে। কিন্তু আজ সেই দেশ অনেকের কাছে এক আতঙ্কের নাম।
প্রাচীনকালে সোমালিয়া ছিল একটি জরুরি বাণিজ্যিক কেন্দ্র। মধ্যযুগে বেশ কয়েকটি সোমালি সাম্রাজ্য আঞ্চলিক বাণিজ্যের নেতৃত্ব দিত।
১৯৬৯ সালে প্রেসিডেন্ট আলী শারমা তারই দেহরক্ষীদের হাতে নিহত হলে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন পার্লামেন্টের স্পিকার মুখতার মোহামেদ হুসেইন। এর ছয় দিনের মাথায় সংঘটিত হয় এক সামরিক অভ্যুত্থান। মূলত তখনই অবসান ঘটে সোমালিয়ার গণতান্ত্রিক যুগের। দেশটিতে সামরিক স্বৈরাচারী শাসন চলে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
এরপর থেকেই উত্থান হয় সোমালিয়ার উপকূলে জলদস্যুতা। একবিংশ শতকের প্রথম দিকে সোমালিয়ার গৃহযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় থেকে আন্তর্জাতিক জাহাজগুলোর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে সোমালিয়ার এসব জলদস্যুরা।
জানা যায় সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যুতা মূলত এই উপকূলে অবৈধভাবে মাছ ধরার ফলে সৃষ্টি হয়েছিল। ডিআইডব্লিউ এবং মার্কিন হাউজ আর্মড সার্ভিসেস কমিটির মতে, বিদেশী জাহাজ থেকে সোমালি উপকূলে বিষাক্ত বর্জ্য ডাম্পিং করার ফলে স্থানীয়দের পরিবেশ বসবাসের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছিল। এর প্রতিবাদে স্থানীয় জেলেরা সশস্ত্র দলে বিভক্ত হয়ে বিদেশী জাহাজ এ অঞ্চলে প্রবেশ বন্ধ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে বিকল্প আয় হিসেবে তারা বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ মুক্তিপণের জন্য ছিনতাই শুরু করে।
তথ্য বলছে ২০১১-এর শেষ দিকে জলদস্যুরা এডেন অঞ্চল থেকে চারটি জাহাজ সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি করে নেয়। এছাড়া ১৮ই অক্টোবর ২০১৩ সালে জলদস্যুরা একটি বড় জাহাজ ছিনতাই করে এবং ৫২ জনকে বন্দি হিসেবে আটক রাখে।
২০০৫ সালের পর থেকে সোমালিয়ান জলদস্যুরা সংঘবদ্ধ হয়ে বৃহৎ পরিসরে আক্রমণ শুরু করে। সমুদ্র বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও দক্ষতার কারণে তারা কেবল ক্ষিপ্রগতিতেই নয় বরং আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হানা দেয়। যা তাদের দস্যুবৃত্তিতে অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছে।
এস আর/
Discussion about this post