কোরবানি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিয়মিত আমল ছিল। তিনি মাদানী জীবনে নিয়মিত কোরবানি পালন করতেন। তিনি কোরবানির জন্য সর্বদাই উত্তম পশু নির্বাচন করতেন। তার নির্বাচিত কোরবানির পশু কেমন হতো এ বিষয়ে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণনা পাওয়া যায়।
এক হাদিসে হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিং বিশিষ্ট, হৃষ্টপুষ্ট একটি মেষ কোরবানি করেন, যার মুখমণ্ডল, চোখ ও পা কালো বর্ণের ছিল। (ইবনে মাজা, ৩১২৮) অপর হাদিসে ইউনুস ইবনু মাইসারা ইবনু হালবীস রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর সাহাবী আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর সাথে কোরবানির পশু ক্রয় করতে গেলাম।
তিনি একটি সামান্য কালো বর্ণের মেষের দিকে ইশারা করেন, যার আকৃতি খুব উঁচুও ছিল না, বেটেও ছিল না। তিনি আমাকে বলেন, এই মেষটি আমার জন্য ক্রয় কর, কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর মেষের সাথে এর একটা সাদৃশ্য আছে। (ইবনে মাজা, ৩১২৯)
আমি প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি। তাদের গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু হতে যে রিজিক দেওয়া হয়েছে সেগুলোর ওপর তারা যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। কারণ, তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য, কাজেই তার কাছেই আত্মসমর্পণ করো আর সুসংবাদ দাও বিনীতদের।
আর গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু হলো: উট, গরু, ছাগল, দুম্বা বা মেষ। আর কোরবানিতে একটি ছাগল, মেষ বা দুম্বা একজনের পক্ষ হতে যথেষ্ট হবে। পক্ষান্তরে একটি উট বা গরু সাতজনের পক্ষ থেকে যথেষ্ট হবে।হজরত জাবির (রা.) এক বর্ণনায় বলেছেন, আমাদের আল্লাহর রাসুল (সা.) উট ও গরুর ক্ষেত্রে সাতজনকে একটি পশুতে ভাগ নিতে নির্দেশ করেন।
কোরবানির গুরুত্ব সম্পর্কে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোরবানির দিনের আমলসমূহের মধ্য থেকে পশু কোরবানি করার চেয়ে কোনো আমল আল্লাহ তায়ালার নিকট অধিক প্রিয় নয়।
কিয়ামতের দিন এই কোরবানিকে তার শিং, পশম ও ক্ষুরসহ উপস্থিত করা হবে। আর কোরবানির রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহ তায়ালার নিকট কবুল হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে কোরবানি কর। (জামে তিরমিজি, হাদীস : ১৪৯৩)
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদিস শরিফে কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যার কোরবানির সামর্থ্য আছে তবুও সে কোরবানি করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (মুসনাদে আহমদ ২/৩২১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫)
এস আই/প্রবাস খবর
Discussion about this post