সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি পূরণ হওয়ার পর আন্দোলন নিয়ে দোটানায় পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। সরকার মূল দাবি মেনে নেওয়ায় একটি অংশ আর আন্দোলন অব্যাহত রাখতে চাইছে না। তবে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নতুন দাবি নিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যেতে চাইছেন অন্যরা। ইতোমধ্যে আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজতে থাকা অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়ক আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। ডিবি হেফাজতে থাকা সমন্বয়কদের স্বজনরাও জানিয়েছেন তারা ভাল আছেন এবং তাদেরকে দিয়ে জোর করে বিবৃতি দেওয়া হয় নি। তবে আন্দোলনকারীদের অপর একটি অংশ কতিপয় ইস্যু তুলে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।
এদিকে, ‘যৌক্তিক আন্দোলনের দাবির মুখে ২৩ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আংশিক বিজয় অর্জিত হয়েছে’ উল্লেখ করে সারা দেশে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনাসহ একাধিক দাবি জানিয়েছে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী মঞ্চ’ নামে নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম। যদিও এই প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক বা সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়করা। অন্যদিকে, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমন্বয়করা সংবাদ সম্মেলন করে এই আন্দোলন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। এসব বিষয় শিক্ষার্থীদের দোটানায় ফেলেছে। আন্দোলন নিয়েও সন্দিহান অনেক শিক্ষার্থী।
কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা: গত ২৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়াসহ কয়েকটি দাবি পূরণে ৩০ দিনের আলটিমেটাম দিয়ে সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন। তবে তাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে গত রোববার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ‘সমন্বয়ক কমিটি’ গঠন করেছেন অন্যরা।
অন্যদিকে, গত ২৭ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও নানা বাস্তবতায় আপাতত কোনো কর্মসূচি নেই বলে জানান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক সুজয় বিশ্বাস শুভ। তবে তারা হল খুলে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধসহ চার দফা দাবিও জানান।ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, কর্মসূচি থেকে পুরোপুরি সরে আসেননি আন্দোলনকারীরা। গত রোববার গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন কর্মসূচিতে তারা অংশ নিয়েছেন।
গত রোববার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যারা আন্দোলন প্রত্যাহার ঘোষণা করেছে, তারাই শুরু থেকে আন্দালনে নেতৃত্ব দিচ্ছিল। তবে আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক শিক্ষার্থী তাদের এ ঘোষণা মেনে নেননি।
এস এম/
Discussion about this post