ঢাকাই সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় নায়ক প্রয়াত মান্নার মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৮ সালের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন তিনি। যদিও পরিবারের দাবি ছিল, হাসপাতালে চিকিৎসা বিলম্বিত হওয়ার কারণে এ অভিনেতার মৃত্যু হয়েছে। আজ অভিনেতার প্রয়ানের ১৭ বছর পূর্ন হলো।
অভিনয় জীবনে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন মান্না। একসময় বড় পর্দায় চিত্রনায়ক মান্নার সিনেমা মানেই ছিল হলভর্তি দর্শক আর সফল ব্যবসা। মান্নার মৃত্যুর পর দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন সেভাবে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। বলতে গেলে তার অভাব পূরন হয়নি সেভাবে।মান্নার শুন্যতা আজও স্পষ্ট ঢাকাই সিনেমায়।
এদিকে, প্রয়াত এই নায়কের জীবনী নিয়ে তৈরি হতে পারে অনেক সিনেমা- এমনটা নির্মাতারা অকপটেই স্বীকার করেন। সেই ভাবনা থেকেই মান্নার জীবনকাহিনি নিয়ে সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করেছেন তার স্ত্রী শেলী মান্না। নায়কের মৃত্যুর রহস্য নিয়ে চলমান মামলার কার্যক্রম শেষ হলেই সিনেমার কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
শেলী মান্নার কথায়, ‘অনেক দিন ধরেই মান্নার জীবন নিয়ে সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করছি। ইতিমধ্যে একটা রাফ চিত্রনাট্য তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আমরা অপেক্ষা করছি আদালতের রায়ের জন্য। যেহেতু তার মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে, তাই শেষটা জানার অপেক্ষায় আছি। শেষটা জানা গেলেই সম্পূর্ণ হবে চিত্রনাট্য, তৈরি করতে পারব একটা কমপ্লিট সিনেমা।
প্রতিবছরের মতো এবারও নায়কের মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবার আর ভক্তদের পক্ষ থেকে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে। শেলী মান্না বলেন, ‘মৃত্যুবার্ষিকী তো বেদনাদায়ক ব্যাপার। এখানে উৎসবের কোনো বিষয় নেই। প্রতিবছরের মতো এবারও পারিবারিকভাবে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া সারা দেশে তার ভক্তরাও মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে থাকে।’
১৯৮৪ সালে তিনি এফডিসির নতুন মুখের সন্ধান কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে আসেন। নায়করাজ রাজ্জাক মান্নাকে প্রথম চলচ্চিত্রে সুযোগ করে দেন। ‘তওবা’র মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। মান্না অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তওবা’ হলেও তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার নাম ‘পাগলী’। তবে দর্শক নজরে পড়েন ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে।
এরপরই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে একটি শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন তিনি। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ সিনেমাতে দুর্দান্ত অভিনয় করে মান্না হয়ে ওঠেন পরিচালক-প্রযোজকদের নির্ভরযোগ্য নাম। মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’ ছবিগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তাকে তুমুল জনপ্রিয় করে তোলে। ১৯৯৯ সালে মান্না ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপার-ডুপারহিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। অভিনয়, অ্যাকশন, সংলাপ বলার ধরন সবকিছু মিলেই একটা স্বতন্ত্র স্টাইল দাঁড় করেছিলেন তিনি।
এম এইচ/
Discussion about this post