ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৬৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহুসংখ্যক মানুষ।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ভোর থেকে রাতের মধ্যে তারা আহত ও নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে ।
শুক্রবার মধ্য,উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল— অর্থাৎ সর্বত্র ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। এ সময় ৬৪ জন নিহত এবং আরও বহুসংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশিই গাজার প্রধান শহর গাজা সিটি এবং উত্তর গাজার বাসিন্দা।
বর্তমানে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফার কাছে শাবৌর এবং তেল আস সুলতান এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছে। এই দুই ঘাঁটি থেকেই সর্বশেষ এই হামলা পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ফের জানিয়েছেন, ইসরায়েল তার যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনের জন্য বদ্ধপরিকর। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘জিম্মিদের মুক্তি এবং হামাসকে পরাজিত করা—ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এখন চূড়ান্ত বিজয়ের পথে এগোচ্ছে।’
শুক্রবার ছিল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র দিন গুড ফ্রাইডে। ইসরায়েলের ব্যাপক হামলার মধ্যেই স্থানীয় গির্জাগুলোতে অনাড়ম্বরহীনভাবে ধর্মীয় আচার-আনুষ্ঠানিকতা পালন করেছেন গাজার খ্রিস্টানরা।
গাজার স্থানীয় একটি চার্চ থেকে ইহাব আয়াদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে গুড ফ্রাইডের দিন আমরা সবাই পরিবার-পরিজনসহ গির্জায় আসতাম। সবার সঙ্গে সবার দেখা-সাক্ষাৎ হতো। প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আসা-যাওয়া হতো। কিন্তু এবার সেই পরিস্থিতি নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিজে আমার কোনো বন্ধু বা আত্মীয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাইনি। কারণ দখলদার (ইসরায়েলি) বাহিনীর হামলায় আমার অধিকাংশ বন্ধু,প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় হামাসের যোদ্ধারা। ওই সময় ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনার পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। তবে বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করা হয়।
শুক্রবারের অভিযানের পর গত দেড় বছরে উপত্যকায় মোট নিহতের সংখ্যা ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার জনে। এই নিহত ও আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
সূত্র: আলজাজিরা
এস এইচ/
Discussion about this post