এক সপ্তাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর দেশের শেয়ারবাজারে আবারও দরপতন হয়েছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই পতন দেখতে হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। ফলে সপ্তাহজুড়ে কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম।
এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৭ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমে গেছে। আর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ৭৫ পয়েন্টের বেশি। দেশ পরিচালনের দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এটি শেয়ারবাজারের চতুর্থ সপ্তাহ। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আরও তিনটি সপ্তাহ পার করেছে শেয়ারবাজার। এ চার সপ্তাহের মধ্যে তিন সপ্তাহেই শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে।
হাসিনা সরকার পতনের পর শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন হলেও নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দুই সপ্তাহ বিনিয়োগকারীদের জন্য খুব একটা ভালো যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে দরপতনের পাল্লা ভারি হয়। ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান নাম লেখায়, তার দ্বিগুনের বেশির স্থান হয় দাম কমার তালিকায়।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এর আগের সপ্তাহের চেয়ে বাজার মূলধন কমেছে এক শতাংশ। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৮১ কোটি টাকায় শুরু হওয়া বাজার সপ্তাহের শেষে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯২ হাজার ৪৩১ কোটি টাকায়। তবে দিনের গড় লেনদেন পৌনে এক শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৮২৪ কোটি টাকা।
পুঁজিবাজারের ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, ইনডেক্স বাড়বে, কমবে আবার মূলধন বাড়বে, কমবে এটাই মূলত বাজার। এটি নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। এখন যেই বাজার আছে এটাতে যদি কোনো লিকেজ না থাকে তাহলে এখান থেকে বাজার ভালো হবে। বিনিয়োগকারীদের জন্য ম্যাসেজ হলো তারা যেনো কখনই কোনো গার্বেজে বিনিয়োগ না করে। তাহলে পুঁজি হারানোর শঙ্কা কমে যাবে।
সপ্তাহজুরে ডিএসই’র সূচকেও ছিল নিম্মমুখী ধারা। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭২৮ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে সোয়া এক শতাংশের বেশি। সপ্তাহজুরে ডিএসইতে মোট লেনদেন হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সংখ্যা ৩৯৫টি। দাম বেড়ছে ৭৬টির, কমেছে ৩১১ টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৮টি কোম্পানির শেয়ারের দর।
মো. সাজেদুল ইসলাম আরও বলেন, শুধু আমাদের অন্তর্গত কারণ নয় বহিরাগত কিছু কারনে বাজার কনফিডেন্স হারাচ্ছিলো। রিজার্ভ যদি বাড়ে, ইন্টারেস্ট রেট বর্তমানে যা আছে সেটি যদি কমে, মুদ্রাস্ফীতি যদি কমে তাহলে বাজারে কনফিডেন্ট বাড়বে এবং বিনিয়োগকারী আসবে।
খাতভিত্তিক লেনদেনে শীর্ষে ছিল বিভিন্ন ব্যাংকের শেয়ার। মোট লেনদেনের সাড়ে ১৭ শতাংশই ছিল এই খাতের দখলে।
এ ইউ/
Discussion about this post