মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশের তালিকায় রয়েছে কুয়েত। দেশটির বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশি শ্রমিকদের রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা। চুক্তির মেয়াদ শেষে অথবা পারিবারিক জরুরী প্রয়োজনে শ্রমিকরা দেশে ছুটিতে যেতে চাইলে অথবা ছুটি মঞ্জুর করাতে কুয়েতের বেশিরভাগ কোম্পানিগুলোতে দায়িত্বরত সুপারভাইজার, ম্যানেজারকে ঘুষ দিতে হয়। তা না হলে ছুটি মঞ্জুর হয় না অথবা পাসপোর্ট দেওয়া হয় না।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজিত গণশুনানিতে এমনই অভিযোগ করেন একজন কুয়েত প্রবাসী সমাজকর্মী মহসিন পারভেজ।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, এক প্রবাসী টানা ৬ বছর কাজের পর দেশে যাওয়ার জন্য ছুটি চাইলে তার কাছে বাংলাদেশি সুপারভাইজার ১শ কুয়েতি দিনার দাবি করেন। কুয়েতের শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতি বছর বা দুই বছর পর ছুটি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও মানা হচ্ছে না এই নিময়। কিছু কিছু কোম্পানিগুলোতে কিছু অসাধু বাংলাদেশি সুপারভাইজার ও ম্যানেজাররা তারা নিজস্ব নিয়ম বানিয়ে টাকার বিনিময়ে ছুটির পাস দিচ্ছে পছন্দের ব্যক্তিকে অথবা সুবিধা নেওয়া ব্যক্তিকে। কিন্তু অনেকেই চুক্তির মেয়াদ অনুযায়ী পাচ্ছেন না ছুটি। দীর্ঘদিন পরিবার ও প্রিয়জন থেকে আলাদা থাকায় প্রবাসীরা হতাশা আর মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।
আমাদের সময়ের প্রবাস প্রতিবেদককে মোহাম্মদ হারুন নামে আরেক প্রবাসী জানান, তার এক ভাই অসুস্থ এবং দেশে পারিবারিক ঝামেলা। তাই কোম্পানিতে ছুটির আবেদন করলে তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ভিসা বাতিল করে দেশে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। ২ বছর আগে ৭ লাখ টাকা দিয়ে ভিসা নিয়ে কুয়েতে এসে ৮ ঘন্টা ডিউটিতে ৭৫ দিনার বেতনে কাজ করেছেন তিনি।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার শ্রম আবুল হোসেন বলেন, ‘এই দেশের শ্রম আইন অনুযায়ী যদি শ্রমিককে ঠিকমত বেতন না দেওয়ায় হয়,আকামা নবায়ন না করে প্রাপ্ত ছুটি না দেওয়া হয়, সেই শ্রমিক চাইলে লেবার কোর্টে আবেদনের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্তা নিতে পারেন এবং প্রতিকার পেতে পারেন। এখন পর্যন্ত এই ধরনের বিষয়ে কোনো শ্রমিক আমাদের কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা কোম্পানির মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলব। লিখিত অভিযোগ করলে আশা রাখি তারা প্রতিকার পাবেন।’
এম এইচ/
Discussion about this post