অ্যাপসের মাধ্যমে বাংলাদেশিদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার নাম করে ভয়ংকর প্রতারণায় নেমেছে চীনারা। দুই বছরে প্রায় দেড় হাজার ব্যক্তির কাছ থেকে ২০০ কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারকরা।
সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দুটি ইউনিটের তদন্তে ধরা পড়েছে এক চীনা নাগরিকসহ ১৫ জন। এ ছাড়া অভিযান শুরুর পর পালিয়ে গেছে এই চক্রের মূলহোতা এক চীনা নাগরিক। অভিযানের খবর পেয়ে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে গা ঢাকা দিয়েছে ওই চীনা নাগরিক।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সহজ শর্তে ও নামমাত্র সুদে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দেয় প্রতারকরা। বিজ্ঞাপন দেখে ক্লিক করলেই প্রতারণা শুরু হয়। গ্রাহকের মোবাইলের ছবি, ভিডিও, নম্বরসহ সব তথ্য চলে যায় প্রতারকদের হাতে। সপ্তাহ না ঘুরতেই দ্বিগুণ, তিনগুণ টাকা ফেরতের জন্য গ্রাহককে কল করা হয়। সময়মতো টাকা পরিশোধ না করলেই নেমে আসে বিপদ।
ডিএমপি ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, গত ছয় মাসে এই প্রতারকদের টাকা আদান-প্রদানের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাটি। এ সময়ে তারা ৫০ কোটির বেশি টাকা নিয়েছে। গত দুই বছরে ২০০ কোটির বেশি টাকা তারা নিয়ে গেছে। চীনা প্রতারকদের এই ঋণের ফাঁদে পড়ে টাকা খুইয়েছেন ১৪০০ থেকে ১৫০০ ব্যক্তি। এসময় নাগরিকদের এসব বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এক ভুক্তভোগী জানান, অবচেতন মনে একটি বিজ্ঞাপনের লিঙ্কে ক্লিক করার পরই ফাঁদে পড়েন তিনি। এরপর পাকিস্তানের একটি নম্বর থেকে ফোন আসে তার মোবাইলে। সেখানে তাকে জানানো হয় তার বিকাশ নম্বরে ২৩ হাজার ৪০০ টাকা ঋণ হিসেবে পাঠানো হয়েছে। এক সপ্তাহ পর তাকে ৩৯ হাজার ১৫০ টাকা ফেরত দিতে হবে। এ সময় তিনি ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালেই দেওয়া হয় হুমকি। বলা হয়, তার গ্যালারির ছবি এডিট করে স্বজনদের পাঠাবে। এরপর বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে ৮ লাখ ৬ হাজার ২০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
Discussion about this post