বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ২৮টি ছাত্রসংগঠনের নেতাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মতবিনিময় সভায় দাওয়াত না দেয়া নিয়ে চলছে নানান আলোচনা সমালোচনা। এ নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করেছে ছাত্রদল।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটির সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই। তবে শিবিরকে ছাত্ররাজনীতির মূল ধারায় প্রশ্রয় দেওয়ার অর্থ হচ্ছে ছাত্ররাজনীতি বিলুপ্ত করতে সাহায্য করা, তাই তাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান রয়েছে বলে তিনি জানান।
নাছির বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটির সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। তবে আমরা দেখেছি গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সব রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে শুধু তারাই অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে, তারাই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।’
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ছাত্রদল দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে রাজধানী পর্যন্ত, সব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমাদের নেতাকর্মী-সমর্থক আছে। শুধু আমরাই ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সর্বস্তরের ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করি। সেই হিসেবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সংস্কার এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়া যাতে মুষ্টিমেয় কিছু ছাত্রদের হাতে বন্দি না হয়ে যায়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’
তিনি আরো বলেন, আমরা যেহেতু আরো অনেক ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি, আমরা সেই ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের মতামতও জানার চেষ্টা করেছি। আমরা দেখেছি, সবাই আমাদের সঙ্গে একমত যে গণঅভ্যুত্থানের পরে সবার প্রতিনিধিত্বের বদলে একটা অংশের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করার আহ্বান জানাচ্ছি।
শিবিরকে সভায় না ডাকার বিষয়ে তিনি বলেন, শিবিরের রাজনৈতিক পলিসি হচ্ছে -পার্টলি ওপেন, মোস্টলি সিক্রেট। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে রাজনীতিকে গোপনীয়তার দিকে নিয়ে যাওয়া। এ জন্য শিবিরের সিক্রেট উইং ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
নাছির বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান চলাকালেও তারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছে, আবার গণঅভ্যুত্থানের পরও তারা ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে ষড়যন্ত্র করেছে। শিবিরকে ছাত্ররাজনীতির মূল ধারায় প্রশ্রয় দেয়ার অর্থ হচ্ছে ছাত্ররাজনীতি বিলুপ্ত করতে সাহায্য করা, যা একটি আত্মঘাতী পদক্ষেপ। আমরা ছাত্ররাজনীতির সামগ্রিক স্বার্থে শিবিরের কার্যক্রম নিয়ে সন্দিহান।
এ ইউ/
Discussion about this post