পাকিস্তানে কলেজ ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে। পুলিশ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে দুইদিনের জন্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
লাহোর শহরের পূর্বাঞ্চলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এমন খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উত্তেজনা শুরু হয়। এরপর চারটি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
যৌন হয়রানির ঘটনা পাকিস্তানে খুব সাধারণ। তবে এ ব্যাপারগুলো তেমন একটা সামনে আসে না। তাছাড়া বিক্ষোভও সাধারণত দেখা যায় না।
বৃহস্পতিবার সহিংসতা শুরু হয় যখন পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিন্ডি শহরের একটি ক্যাম্পাসের বাইরে কয়েকশ শিক্ষার্থী বিক্ষোভ দেখায়। তারা আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয় ও কলেজভবন ভাঙচুর করার আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধ করে। এতে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
রাওয়ালপিন্ডির পুলিশ অফিসার সাঈদ খালিদ মেহমুদ হামদানি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) ভাংচুরের ঘটনায় ৩৮০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনার তদন্ত চলছে।
পাঞ্জাবের মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসের বেজমেন্টে এক নারী শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করা হয়েছে, এমন একটি খবর গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিক্ষোভের দানা বাধে।
তবে পুলিশ, কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং প্রাদেশিক সরকারের দাবি, তাদের কাছে কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ জানাননি। অনলাইনে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে শহরের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগই পুরুষ শিক্ষার্থী। বিক্ষোভকারীরা লাহোরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জানালা ভেঙে দিয়েছে এবং স্কুলবাস পুড়িয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
পাঞ্জাব গ্রুপ অব কলেজেস নামের একটি গোষ্ঠী বেসরকারিভাবে নারীদের বিভিন্ন কলেজ পরিচালনা করে থাকে। লাহোরে পাঞ্জাব গ্রুপ অব কলেজেসের পরিচালক আরিফ চৌধুরীও গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। সত্যিই যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তবে পদত্যাগ করে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ বলেছেন, যারা অনলাইনে ভুয়া পোস্ট ছড়াচ্ছেন, তাদের সাজা দেয়া হবে।
লাহোর পুলিশ জানিয়েছে, শান্তি বিঘ্নিত করার অভিযোগে ২৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী।
সূত্রঃ জিও নিউজ ও আল জাজিরা
এ ইউ/
Discussion about this post