জনশক্তি রপ্তানিতে বড় এক মাইলফলক অর্জন করেছে বাংলাদেশ, টানা দুই বছরে ১০ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে জনশক্তি রপ্তানি।বাংলাদেশি শ্রমিকদের শীর্ষ গন্তব্য সৌদি আরব, এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ৩৭ শতাংশই হয়েছে উপসাগরীয় এ দেশটিতে। তারপরই রয়েছে মালয়েশিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, কাতার, কুয়েত ও জর্ডান।জনশক্তি রপ্তানিতে মধ্যপ্রাচ্য নির্ভরতা কাটানোর চেষ্টা চলছে। এর ফলে বিকল্প শ্রমবাজার হিসেবে ইউরোপকে ভাবছে সরকার।
চলতি ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ ৯৯ হাজার বাংলাদেশী কর্মী প্রবাসে চাকরি নিয়ে গেছেন। গত বছরের রেকর্ড ১১ লাখ ৩৫ হাজার কর্মী রপ্তানির ধারাবাহিকতা, এ বছরেও দেখা যাচ্ছে।
রিক্রুটিং এজন্সিগুলো বলছে, মহামারির কারণে দুই বছর বিদেশে যেতে না পারা অনেক শ্রমিকই ২০২২ ও ২০২৩ সালে গেছেন, এ সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে থাকায় তাদের চাকরির বাজারও উন্মুক্ত হয়। পাশাপাশি সব ধরনের সৌদি প্রতিষ্ঠানে অভিবাসী বাংলাদেশীদের জন্য নির্ধারিত কোটা ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করার ঘটনাও অবদান রেখেছে রেকর্ড এই প্রবৃদ্ধিতে।
তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে বিদেশ গেছেন ৬ লাখ ১৭ হাজার কর্মী। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে গেছেন ১ লাখ ৯০ হাজার কর্মী। আর ৫১ হাজার জনশক্তি বিদেশে পাঠিয়ে একক জেলা হিসেবে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে কুমিল্লা। জনশক্তি রপ্তানিতে চলতি বছর আগের সব রেকর্ড ভাঙার আশা সংশ্লিষ্টদের।
জনশক্তি কর্মসংস্থা ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর বা বিএমইটির পরিংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয় ১৯৭৬ সাল থেকে। ওই বছর ৬ হাজার ৮৭ জন কর্মী বিদেশে যান। তারপর থেকে প্রায় প্রতি বছরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিয়মিত জনশক্তি রপ্তানি হচ্ছে। দীর্ঘ ৪৮ বছরের মধ্যে শুধু ২০১৭ সালে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে আগের রেকর্ড ছিল। চলতি বছর ছাড়া ২০১৭ সালেই শুধু ১০ লাখের মাইলফলক পার করেছিল বাংলাদেশ। সেই বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন কর্মী গিয়েছিলেন।
জনশক্তি রপ্তানি বাড়লেও সেই তুলনায় দেশে রেমিট্যান্স আসছে না। গত দুই অর্থবছরেই এটি রয়েছে ২২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। অথচ মহামারির আগের সময়ে অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। তবে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ার রেমিট্যান্স কমার জন্য অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা শ্রমিকের স্বল্প-দক্ষতার কাজে যোগদান, হুন্ডির দৌরাত্ম্য, এবং ভুয়া চাকরির নামে অদক্ষ শ্রমিক পাঠানোকে দায়ী করছেন।
Discussion about this post