জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের বহনকারী উল্কা-৪ বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বাস চালক জগদীশসহ ৯ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
আজ রোববার ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় একতা পরিবহনের ড্রাইভার, হেলপারসহ অন্যান্য স্টাফরা এই হামলা চালায় বলে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, একতা পরিবহনের স্টাফরা গাড়ি থামিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ির ভেতর লাঠিসহ প্রবেশ করে শিক্ষার্থীসহ ড্রাইভারকে আক্রমণ করে। এতে শিক্ষার্থীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। হামলার সময় শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গেলে ড্রাইভার জগদীশকে মারধর করা হয়, যার ফলে তিনি গুরুতর আহত হন। একই সঙ্গে তার চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয় এবং তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহত বাস চালক জগদীশ বলেন, ‘মহাখালী বাস টার্মিনালে আমাদের গাড়ির সামনে একতার বাস ছিল। একতা বাসের সামনে কোনো গাড়ি ছিলো না। তাদের বারবার সাইড দেওয়ার কথা বললেও তারা সাইড না দিয়ে বরং গাড়ি থেকে হেল্পার ও ড্রাইভার লাঠি নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। সেখানে একতা বাসের আরও অনেক কর্মচারী ছিলেন। তারাও আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলা করে আমার হাত ভেঙে দিয়েছে এবং পুরো শরীরে জখম করে করেছে। চোখে আঘাত করেছে। আমি তাদের বিচার চাই।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান সোহাগ বলেন, একতা বাস এক জায়গায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়ে আমাদের বাস চালক মামা যখন একতা বাসের ড্রাইভারকে বলে তখন সে লাঠি দিয়ে আমাদের বাসচালক মামার ওপর হামলা চালায়। তারপর তাকে ধরে নিয়ে যেতে চাইলে আমরা বাধা দেই। তখন আমাদের ওপরও হামলা চালায়। বাসে মেয়েরা ছিলো। তাদের উপরও ইট-পাথর ছুড়ে মারে।
এ বিষয়ে জবির পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, আমাদের চালক জগদীশ মারাত্মক আহত। তার চোখটা ঠিক থাকবে কি-না নিশ্চিত না। আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও আহত হয়েছে। শুধু জবির বাস না, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসেই এমন হামলা কাম্য নয়। ঘটনার পর একতা পরিবহনের ওই বাসের ড্রাইভার, হেল্পার পলাতক। একতা বাসের মালিকপক্ষ এসেছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। তারাও বিষয়টির সমাধান চায়। জবির কোনো বাসে যেনো এমন হামলা আর না হয় তা নিশ্চিত করতে আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি। একটা সমাধান আসবে।
এদিকে আজ বিকেলে পরবর্তীতে ঢাকা জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বিষয়টি সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পারস্পরিক আলোচনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস মেরামত, আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন এবং হামলায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার সম্মতির ভিত্তিতে দুই পক্ষের সমঝোতায় বিষয়টি সুরাহা হয় বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, আমরা বিষয়টি একটি সুরাহা করেছি। শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও একতা পরিবহনের মালিকপক্ষ এসেছিল। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস মেরামত, আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে। পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরও বিরুদ্ধেও তারা ব্যবস্থা নেবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে মহাখালীর একই জায়গায় জবির বাসের মেয়েদের ইভটিজিং করাকে কেন্দ্র করে সৌখিন বাসের স্টাফদের হামলায় ছয় শিক্ষার্থী আহত হয়েছিলেন।
এ ইউ/
Discussion about this post