পবিত্র কোরআনের ১৮ তম সুরা আল কাহাফ । সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সুরার আয়াত সংখ্যা মোট ১১০টি । কাহাফ অর্থ গুহা। এ সূরাটিতে গুহাবাসীদের বিবরণ স্থান পেয়েছে সেই সাথে সরল পথের আলোচনা করে মোহাম্মদ (সা.)-কে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে, মক্কাবাসীদের পথদ্রষ্টতার জন্য চিন্তা করা নিরর্থক, তাদের ধ্বংস অনিবার্য। জ্ঞানান্বেষণে এক আল্লাহ ভক্ত মহাপুরুষের সাক্ষাৎ এবং জুল কারনাইন ও ইয়াজুজ মাজুজের বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে।
জুমাবারে সুরা আল কাহাফ তেলাওয়াতের কথা বলা হয়েছে। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) রাসুল (সা.)–এর পক্ষ থেকে বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত নূর বর্ষিত হবে।’
সুরা কাহাফে চারটি ঘটনা, চারটি বক্তব্য ও উপদেশ রয়েছে। এ সূরার আলোচনার মূল বিষয় হল আসহাবে কাহাফ বা কয়েকজন দুনিয়াত্যাগী গুহাবাসী মুমিনের ঘটনা।
মুসনাদে আহমদে হজরত সাহল ইবনে মুয়াজের রেওয়াতে আছে যে, রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নুর হয়ে যায়। আর যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সূরা পাঠ করে তার জন্য জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়।
যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার নুর এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে (মিশকাত ২১৭৫)।
আরেক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে সে আট দিন পর্যন্ত সব ধরনের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে তার ফেতনা থেকেও নিরাপদ থাকবে।
সম্ভব হলে এই সুরাটি মুখস্থ করে ফেলা উত্তম। কারো পক্ষে পুরো সুরা মুখস্থ করা সম্ভব না হলে কমপক্ষে হাদিসে বর্ণিত বিশেষ আয়াতগুলো মুখস্থ করা যেতে পারে। আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পাবে। (মুসলিম, হাদিস : ৮০৯)
আরেক বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের শেষ ১০ আয়াত পাঠ করবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পাবে। , (মুসনাদে আহমদ, ৪৪৬/৬)
আরেক বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের ১০ আয়াত পড়বে সে দাজ্জালের অনিষ্টতা বা ফিতনা থেকে রক্ষা পাবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৮৮৬)
জুমার দিনে সূরা কাহাফ পাঠ করলে কিয়ামত দিবসে তার পায়ের নিচ থেকে আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত নুর আলোকিত হবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহ মাফ হবে। (আত তারগিব ওয়াল তারহিব-১/২৯৮)।
এস আই/
Discussion about this post