জমজমাট নির্বাচনে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র। শেষ বেলায় এসেও হাল ছাড়তে নারাজ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। ভোটারদের মন জয়ে চালাচ্ছেন শেষ চেষ্টা। হিসেবের খাতায় রয়েছে বাংলাদেশিরাও। ডেমোক্র্যাট কমলা নাকি রিপাবলিকান ট্রাম্প, প্রবাসী বাংলাদেশিরা এবার কাকে প্রেসিডেন্ট দেখতে চান?
মার্কিন নির্বাচনের রণবাদ্য বেজে চলছে জোরে শোরে। নির্বাচনী রনাঙ্গনে দুই দলের মুখোমুখি অবস্থান। ভোট নিয়ে কমলা-ট্রাম্প ভাগে বিভক্ত পুরো জাতি। বাদ নেই বাংলাদেশি আমেরিকানরাও। ভোটের মাঠে তারাও সক্রিয়।
নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, টেক্সাস ও মিশিগানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিদের বসবাস। ভোটের উৎসবে নিজেদের সামিল করতে তারাও বিভক্ত দু’ভাগে। নিজেদের চিন্তা আর পছন্দে কেউ ট্রাম্প আবার কেউ কমলা।
ক্ষমতায় এলে বিশ্বময় যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তি আর দেশের অর্থনীতি ভালো হবে এমন প্রত্যাশায় ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট চান অনেকে।
মো. খান নামের এক আমেরিকান বাংলাদেশি বলেন, ‘শান্তি বজায় রাখতে হলে আমি বিশ্বাস করি বর্তমানে দুজন নেতার মধ্যে একমাত্র যোগ্য পার্থী হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বিশ্বে শান্তি আনতে পারবেন। আমরাও এটাই চাই।’
ট্রাম্পের সমর্থত আলী বলেন, ‘সারা পৃথিবাীতে যে যুদ্ধ লেগে আছে একমাত্র ট্রাম্প আসলেই বন্ধ হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এটাই আমেরিকানরা মনে করে। এছাড়া অর্থনীতিতে ট্রাম্পই ভালো করতে পারবনে বলে আমেরিকানরা মনে করেন।’
অপরদিকে অভিবাসন, শরণার্থী, জলবায়ু পরিবর্তন, আয়কর, গর্ভপাত সহ মধ্যবিত্তদের নানা সুবিধাদির কথা মাথায় রেখে ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্রেটিক পার্টিকে আবারো ক্ষমতায় রাখতে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করছেন অনেক বাংলাদেশি।
বাচ্চু নামের আমেরিকান বাংলাদেশি বলেন, ‘কমলা হ্যারিস অভিবাসীদের জন্য কাজ করছেন। বিশেষ করে যারা কম অর্থ উপাজর্ন করছেন তাদের জন্য তিনি অনেক কাজ করেছেন। হেলথ কেয়ারের জন্য কাজ করছেন। সব মিলিয়ে কমলাকেই আমরা চাই।’
ডেমোক্রেট দলের সমর্থক শামীম বলেন, ‘সব জাতি গোষ্ঠীর জন্য কমলা হ্যারিস কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা আশা করি আগামীতে কমলা হ্যারিসই ক্ষমতায় আসবেন।’
২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প। পরের মেয়াদে তিনি বাইডেনের কাছে হেরে গিয়ে কারচুপির অভিযোগ এনে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন হামলায় প্রাণে বেঁচে যান স্পিকারসহ কংগ্রেস নেতারা। এবার হেরে গেলেও তিনি বড় দাঙ্গা সহিংসতার পথ বেছে নিতে পারেন বলে আশঙ্কা ভোটারদের। তাই ট্রাম্পকে পছন্দ করেন না অনেকে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলা এবারের নির্বাচনে অন্যতম প্রধান ইস্যু। ইসরাইলকে সমর্থন দেয়ায় ডেমোক্র্যাটদের প্রতি নাখোশ বাংলাদেশিরা বিশেষ করে মুসলমানরা। যুদ্ধের জেরে কমলাকে ভোট না দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন মুসলিম ভোটাররা।
অন্যদিকে, কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী ট্রাম্পকেও অনেকে ভোট না দিয়ে নির্বাচনের দিন বাড়িতে বসে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেউ আবার ভোট দিচ্ছেন গ্রীন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ৭৪ বছর বয়সি জিল স্টেইনকে।
নির্বাচনের শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত ভোটারদের ভোট পেতে মরিয়া প্রার্থীরা। তবে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন নানা জাতি ধর্ম বর্ণের ভোটাররা।
এম এইচ/
Discussion about this post