ডলার সংকটের মধ্যেই আরও ২৫ পয়সা ডলারের দাম কমাল বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ৩ ডিসেম্বর থেকে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে প্রতি ডলার কেনার দর ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা এবং বিক্রির দর ১১০ টাকা ২৫ পয়সা ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কার্যকর হবে রোববার থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠন দুটি।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কিনতে ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা; আগে যা ছিল ১১০ টাকা। আর আমদানি দায় মেটাতে ডলারের দাম নেওয়া যাবে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা, আগে যা ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে সরকারের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকও সমপরিমাণ প্রণোদনা দিতে পারবে। ফলে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স পাঠালে ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১১৫ টাকার কিছু বেশি পাবেন উপকারভোগীরা।
এর আগে, এক বছরের বেশি সময় ধরে দাম বাড়ানোর পর গত ২২ নভেম্বর প্রথমবারের মতো ডলারের দর ৫০ পয়সা কমানো হয়েছে। যদিও বাজারে এই দরে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে না। গতকালও অনেক ব্যাংক ১২১ টাকার বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনেছে।
খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সামনে নির্বাচন, এ জন্য বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা না করে কৃত্রিমভাবে ডলার সংকট কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে চলতি মাসে দুই দফায় ৭৫ পয়সা দাম কমানো হয়েছে। এর পাশাপাশি রিজার্ভ বাড়াতে ব্যাংকগুলো থেকে ডলারও কেনা হচ্ছে। অথচ ব্যাংকগুলো আমদানি দায় শোধ করতে পারছে না। তাই বিভিন্ন দেশের ব্যাংকগুলো বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম বলেন, আগে আমাদের চলতি হিসাবে ঘাটতি কাটিয়ে উদ্বৃত্ত হয়েছে। যা দেড় বছর আগেও প্রায় ১৮ বিলিয়ন ঘাটতি ছিল। যা বর্তমানে প্রায় ৯ বিলিয়ন উদ্বৃত্ত রয়েছে। সেই হিসাবে বাজারে ডলারের সংকট থাকার কথা না। বর্তমানে ডলার বাজারের যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, সেটি প্রকৃত চিত্র নয়। তিনি আরও বলেন, এখন বাজারে ডলারের দর বাড়ার যে প্রবণতা, সেটি থাকার কোনো কারণ নেই।
ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে সময় সময় বাফেদা ও এবিবি ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে আসছে। এ দুটি সংগঠন মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংক সংশ্লিষ্ট। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে তারা সময় সময় ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করছে।
Discussion about this post