গত এক বছরের বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত হলেও এখনো প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম ১২১ টাকার বেশি। এ দামে কিছু ব্যাংক এখনো ডলার কিনছে। প্রবাসী আয় কেনার সঙ্গে জড়িত ব্যাংক ও বিদেশি রেমিট্যান্স হাউস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অথচ ব্যাংকগুলোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১১০ টাকা। এর বাইরে সরকার ও ব্যাংকের আড়াই শতাংশ করে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনাসহ দাম দাঁড়ায় ১১৫ টাকা ৫০ পয়সা।
প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় আমদানিকারকদের কাছ থেকে আমদানি দায় মেটাতে ডলারের বেশি দাম নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এতে আমদানি খরচ বাড়ছে, যার প্রভাব গিয়ে পড়ছে পণ্যমূল্যের দামে। বর্তমানে আমদানিতে ব্যাংকারদের দুই সংগঠনের নির্ধারিত ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
ব্যাংকারদের দুই সংগঠন বাফেদা ও এবিবির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম ১১০ টাকা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী আয়ে সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। পাশাপাশি কিছু ব্যাংকও সমপরিমাণ প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ডলারের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। ডলার-সংকটের এই সময়ে এভাবে প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি।
একাধিক ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব ব্যাংক ঘোষণার চেয়ে ডলারে বেশি দাম দিচ্ছে না, তারা খুব বেশি প্রবাসী আয় পাচ্ছে না। বিশেষ করে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ঘোষণার চেয়ে ডলারের বেশি দাম না দেওয়ায় প্রবাসী আয় পাচ্ছে না। চলতি হিসাবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর প্রবাসী আয় একেবারে কমে এসেছে। তবে বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাংক বাড়তি দামে এখনো প্রবাসী আয় কিনছে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি একটি ব্যাংকের মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউস গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতি রিঙ্গিত কিনেছে ২৫ টাকা ৭০ পয়সায়। বর্তমানে ১ ডলার সমান মালয়েশিয়ার ৪ দশমিক ৬৮ রিঙ্গিত। সেই হিসাবে প্রণোদনা ছাড়া মালয়েশিয়ার রিঙ্গিতের বিপরীতে প্রতি ডলার কিনতে দাম পড়ছে ১২০ টাকার বেশি। এ দামেই ডলার কিনেছে দেশের একটি বেসরকারি ব্যাংক। তাতে ৫ শতাংশ প্রণোদনাসহ প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ১২৬ টাকা ২৯ পয়সা। এ ছাড়া গতকাল বৈশ্বিক রেমিট্যান্স হাউস স্মল ওয়ার্ল্ড ডলার কিনে ১১৮ টাকা ৫৫ পয়সায় আর ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড নামে অপর একটি এক্সচেঞ্জ হাউস ডলার কেনে ১২০ টাকায়। এই ডলার আরও বেশি দামে কিনেছে দেশের ব্যাংকগুলো।
এদিকে দেশের কয়েকজন আমদানিকারক জানান, ব্যাংকগুলো আমদানি দায় মেটাতে এখনো ডলারের দাম নিচ্ছে ১২২-১২৩ টাকা পর্যন্ত। তবে নথিপত্রে কোনো কোনো ব্যাংক ডলারের দাম ১১৬ টাকা পর্যন্ত দেখাচ্ছে, বাকি টাকা ব্যাংকগুলো অন্যভাবে আদায় করছে।
১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের মাধ্যমে বৈধ পথে প্রবাসী আয় এসেছে ১১৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। গত বুধবার পর্যন্ত যা বেড়ে হয়েছে ১৪২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ফলে গত সপ্তাহে আয় আসা কিছুটা কমেছে।
Discussion about this post