বাংলাদেশে ডলারের বাজার দিনকে দিন অস্থির হয়ে উঠছে । সময়ের সাথে পরিস্থিতি ‘আরও কঠিন’ হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশে ডলার বাজারের এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা এবং নির্ধারিত দামে ডলার বিক্রিসহ বেশকিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছেন বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহীরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ বা এবিবি এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন। বৈঠকে জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছেন বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহীরা। এতে উপস্থিত ছিলেন ২১টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীরা।
বৈঠক শেষে এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ব্যাংক খাতের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবিবি ও বাফেদার সমন্বয়ে ৮ নভেম্বর ডলার কেনাবেচার একটা রেট বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, ওই রেটের মধ্যে সবাই থাকবে।
সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ে ব্যাংকগুলো সরকারি ও নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৬ টাকার বেশি দিতে পারবে না। তবে আমদানিকারকদের কাছে ব্যাংকগুলোকে ১১১ টাকায় বিক্রি করতে হবে; এর বেশি নেওয়া যাবে না। কেউ যদি এটা অমান্য করে তাহলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
তিনি আরও বলেন, ডলারের বাজার খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। স্থিতিশীল করার জন্য সব স্টেকহোল্ডার একসঙ্গে কাজ করছে বলে জানান তিনি। বলেন, কিছু ব্যাংক বেশি সমস্যায় আছে, তাদের এ রেট মানতে সমস্যা হচ্ছে। এজন্য সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যেন বাজার অস্থিতিশীল না হয়।
বেশ কয়েকটি ব্যাংক নির্ধারিত দরের চেয়ে ১০/১২ টাকা বেশি দামে ডলার কিনেছে। এমনকি খোলা বাজারের চেয়েও দুই থেকে পাঁচ টাকা বেশি ধরে ডলার কেনার ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকটি ব্যাংক ১২৩ থেকে শুরু করে ১২৭ টাকা দরে ডলার কিনেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জরুরি বৈঠক প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, গত ৬ মাসে এমন সমস্যা ছিল না; ডলারের দাম ১২৪ টাকা কখনও হয়নি। বাড়তি প্রণোদনা উন্মুক্ত করায় ডলারের বাজারে বিশৃঙ্খলা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সব ধরনের সহায়তা করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
যারা বেশি দামে ডলার কিনেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, তাদের ১২ টাকা লোকসান দিয়ে ১১১ টাকায় ডলার বিক্রি করতে হবে এটাই তো বড় শাস্তি। ১১১ টাকা বিক্রি না করলে আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি। এদিকে খোলা বাজারে একদিনে মার্কিন ডলারের দাম ৫-৬ টাকা বেড়ে গেছে। মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১২৭ টাকায়। অথচ একদিন আগেও এর দাম ছিল ১২১-১২২ টাকা।
Discussion about this post