বাংলাদেশে ছিনতাই হয়ে যাওয়া একটি স্মার্টফোন ভারতের গুজরাট থেকে উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ৷ জানা জায়, গত বছর নভেম্বেরে ফেরদৌস মিয়া নামের এক ব্যক্তির স্যামসাং এস ২৩ আলট্রা ফোনটি ধানমণ্ডি থেকে ছিনতাই হয়ে যায়। সে রাতেই তিনি ধানমণ্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। একইসাথে ‘স্মার্ট থিংস’ নামের স্যামস্যাং ইলেকট্রনিক্স কোম্পানির তৈরি একটি অ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারেন ফোনটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
জিডি করার সময় পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে জানান, ছিনতাইকৃত ফোনটি কেউ ব্যবহার করা শুরু করলেই কেবল সেটা উদ্ধার সম্ভব। ওই অ্যাপের দিকে সার্বক্ষণিক নজর রেখেছিলেন ফেরদৌস। কিছুদিন পরে এক সকালে ওই অ্যাপে তার ছিনতাই হওয়া ফোনের লোকেশন দেখতে পান তিনি। শুরুতে উৎসাহিত হলেও যখন দেখেন ফোনের লোকেশন ঢাকা থেকে ২৫৪৮ কিলোমিটার দূরে ভারতের গুজরাট রাজ্যের আমরেলি শহরে তখন তিনি ফোনটি ফেরত পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়ে দেন। তবে তিনি হাল ছাড়েননি।
ফেরদৌস বিভিন্ন জায়গা থেকে পরামর্শ নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের হাইকমিশন, গুজরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক রাজ্যসচিব, গুজরাটের রাজ্য পুলিশের নোডাল অফিসার, গুজরাট পুলিশ কমিশনারের দপ্তরকে হারানো ফোনটির সমস্ত কাগজপত্রের তথ্য দিয়ে ইমেইল করেন এবং ফোনের লাইভ লোকেশন, আইএমইআই নম্বর, ফোন কেনার রশিদসহ যাবতীয় তথ্যও দেন। তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেও মেইলের কোনো উত্তর না পেয়ে তিনি আশাহত হয়ে যান।
এবছর ১লা মার্চ তিনি গুজরাটের এক পুলিশ কর্মকর্তা থেকে কল পান যেখানে তাকে জানানো হয় যে তার ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে এবং তার ঠিকানা ও চাওয়া হয়। কিছুদিনের মধ্যে তিনি তার স্মার্টফোনটি ফেরত পান।
তিনি এ বিষয়ে সবার উদ্দেশ্যে বলেন, “এমনটা ঘটলে সাধারণ মানুষকে হাল না ছাড়ারই পরামর্শ দেব। আপনার খোয়া যাওয়া ফোন কোনো আন্তর্জাতিক চক্রের হাতে পড়লে সম্ভাব্য সমস্ত সূত্র থেকে তথ্য নিন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানান। নিরাশ হবেন না, আমার কথাই বলি, সীমান্তের ওপারের প্রায় আড়াই হাজার কি.মি. দূরে এক মফস্বল শহর থেকে ফোনটা ফেরত পাব – এটা তো অকল্পনীয়।“
ফেরদৌসের ইন্টারনেটে অনুসন্ধান, তৎপরতা এবং নাছোড়বান্দা মনোভাবের কারণে বাংলাদেশে ছিনতাই হওয়া একটি ফোন ভারত থেকে এভাবে উদ্ধার সম্ভব হয়েছে।
এন এন/
Discussion about this post