ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এফ রহমান হল ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতারা ১৭ লাখ ৮৯ হাজার টাকা বাকি খেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্যান্টিনের মালিক বাবুল। ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচন থেকে ৫ বছরে ছাত্রলীগ নেতারা এ বাকি খেয়েছেন বলে দাবি ক্যান্টিন মালিকের।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাদের বাকির একটি তালিকা গণমাধ্যমের কাছে আসে। তালিকায় ৪৮ জনের বাকির হিসেব পাওয়া যায়। তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের সিংহভাগই হল ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পদপ্রাপ্ত নেতা।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বাকি খেয়েছেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা বাকি খেয়েছেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন।
এছাড়া স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনেরও টাকা বাকি ছিল তবে তা ঈদের আগে তিনি পরিশোধ করেছেন বলে জানান ক্যান্টিন মালিক।
এছাড়া বাকির তালিকায় রয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা, হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী হাসান রিফাত ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিদ ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহিম সরকার ৫৫ হাজার টাকা, হল সংসদের সাবেক ভিপি আবদুল আলীম ৬০ হাজার টাকা, হল ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক কামরুল শুভ ১৭ হাজার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আবছার হোসেন রানা ৪৫ হাজার টাকা, বাইজিদ ৪৫ হাজার টাকা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজু ১২ হাজার টাকা, ছাত্রলীগ নেতা হারুন ৭০ হাজার ও উচ্ছল ৮৫ হাজার টাকা বাকি খেয়েছেন। এছাড়াও বাকির তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের সর্বনিম্ন বাকির পরিমাণ আড়াইহাজার টাকা।
হলের শিক্ষার্থীরা বলছেন, ছাত্রলীগ নেতাদের এমন ‘ফাও’ খাওয়ার কারণে ক্যান্টিন মালিক খাবারের দাম বাড়িয়েছেন এবং মান নষ্ট হয়েছে। এর ফল ভোগ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আমাদের টাকায় খেয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এই টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ, সাধারণ সম্পাদক মুন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহিম সরকারসহ একাধিক নেতাকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও কেউ সাড়া দেননি।
ছাত্রলীগ নেতাদের জন্য ক্যান্টিনে আলাদা রান্না হত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাদের জন্য আলাদা রান্না হতো- এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, ছাত্রলীগের শীর্ষ পদধারী নেতাদের তিনি খুঁজে খুঁজে ফ্রিতে খাওয়াতেন। এমনকি হল ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী নেতাদের জন্য ক্যান্টিন মালিক বাবুল আলাদা রান্না করতেন।
এ অভিযোগ স্বীকার করেছেন ক্যান্টিনের মালিক বাবুল বলেন, ছাত্রলীগ নেতাদের ১৫/২০ জনের জন্য প্রতিদিন আলাদা রান্না হতো। এছাড়া সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের জন্য প্রতিদিন ৮/১০ টি খাবার পাঠানো লাগত।
তবে ‘ফাও খাওয়ায়’ অনেক হিসেব সুনির্দিষ্ট করে রাখা হয়নি, যা এখানে তিনি ‘রাউন্ড ফিগার’ হিসেবে ধরেছেন বলে জানান ক্যান্টিন মালিক বাবুল।সূত্র: সময়ের আলো।
টিবি
Discussion about this post