চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে তীব্র দাবদাহে জলাশয়ের মাছ মরে যাচ্ছে। এতে ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হচ্ছেন মাছচাষিরা। বিগত কিছু দিন ধরে অতিরিক্ত গরমে মাছ মরে ভেসে উঠছে।জানা গেছে, দেশের বেশিরভাগ জেলার ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহের ফলে জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বিপাকে পড়েছেন মিরসরাই উপজেলার মাছচাষিরাও। লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছেন শত শত মৎস্যচাষি।
খন্তাকাটা এলাকার বিভিন্ন দিঘীতে দেখা গেছে, পুরো দিঘি মাছ মরে ভেসে উঠে সাদা হয়ে আছে। কয়েকজন শ্রমিক নৌকা নিয়ে সেসব মাছ দ্রুত সরিয়ে পাড়ে মাটিচাপা দিচ্ছেন। অনেক মাছচাষি তাদের মাছ বাঁচানোর জন্য পানি সেচসহ নানাভাবে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। তারপরও অতিরিক্ত তাপপ্রবাহে মরে যাচ্ছে মাছ।মৎস্যবিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের মতে, প্রচণ্ড গরমে পানিতে পিএইচের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে মাছ মারা যাচ্ছে।মিরসরাই উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর প্রায় ৭ হাজার ৮০৬ একর জলাশয়ে বাণিজ্যিকভাবে মিঠাপানির মাছচাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৭৪৬ একর জলাশয় কেবল ইছাখালী, ওচমানপুর, ধুম ইউনিয়ন ও মুহুরী প্রকল্প এলাকার। উপজেলায় এ বছর মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪৮ হাজার মেট্রিক টন।
গত ৩০ বছরে জমিতে বাঁধ দিয়ে কয়েকশ একর মাছের খামার করা হয়েছে। ফলে অধিকাংশ জলাশয়ের গভীরতা কম। চৈত্র ও বৈশাখ মাসে জলাশয়ে পানি আরও কমে যায়। এরপরও অন্য বছরগুলোতে তাপমাত্রা কম থাকায় মাছের খামারে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। তবে এ বছর বৈশাখ মাসে বৃষ্টি না হওয়া এবং তাপপ্রবাহ বাড়ার কারণে খামারের মাছ মরতে শুরু করেছে। খামারের মাছ রক্ষায় এখন অধিকাংশ খামারিরই দিশাহারা অবস্থা।
মাছচাষিরা বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায় পুকুরে মাছ মারা যাচ্ছে। এই গরমে মাছতো দূরের কথা, মানুষেরও জীবনযাপন কষ্টকর হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলে আবহাওয়া ঠান্ডা হতো।
তারা আরও বলেন, তাপমাত্রার কারণে মাছ মরে যাচ্ছে, মাছের অনেক রোগ হচ্ছে। মাছ ঠিকমতো খাবার খায় না, খেলেও হজম হয় না। এতে করে আমাদের লাখ লাখ টাকার মাছ মারা যাচ্ছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষিদের সহযোগিতা করলে আমরা উপকৃত হতাম।
এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, সারা দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। এমতাবস্থায় চাষিরা দিঘিতে বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা ও পরিমিত মাত্রায় চুন প্রয়োগ করে এবং জরুরি অবস্থায় অক্সিজেন ট্যাবলেট বা পাউডার ছিটিয়ে উপকার পেতে পারেন।
এম এম
Discussion about this post