থাইল্যান্ডের হেফাজতে থাকা ৪৮ জন উইঘুর মুসলিমকে চীনে ফেরত না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই উইঘুর মুসলিমদের ফেরত পাঠানো হলে তারা নির্যাতন, অমানবিক আচরণ ও অপূরণীয় ক্ষতির ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
মানবাধিকার সংগঠন ও কয়েকজন থাই সংসদ সদস্য গত সপ্তাহে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিবাসন বন্দিশিবিরে আটক থাকা উইঘুরদের চীনে ফেরত পাঠানো আসন্ন হতে পারে। তবে থাই সরকার বলেছে, তাদের এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো চীনকে উইঘুরদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। উইঘুররা প্রধানত মুসলিম জাতিগত সংখ্যালঘু। পশ্চিমাঞ্চলীয় সিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় এক কোটি উইঘুর জনগোষ্ঠী রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে সেখানে গণনজরদারি এবং শ্রম শিবিরে জোরপূর্বক শ্রম নেয়া হচ্ছে। তবে বেইজিং এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এক বিবৃতিতে বলেন, এই ব্যক্তিদের চীনে ফেরত পাঠানো উচিত নয়। এর পরিবর্তে তাদের আশ্রয় প্রক্রিয়ার সুযোগ এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা দেয়া উচিত।
থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই গত সপ্তাহে বলেছিলেন, উইঘুরদের চীনে ফেরত পাঠানোর কোনো তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা নেই। আর জাতীয় পুলিশ প্রধান কিত্তিরাত পানপেত সোমবার জানান, এ বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা নেই।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মুখপাত্র বাবর বালুচ গত সপ্তাহে বলেছিলেন, থাই কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্বস্ত করেছে যে উইঘুরদের চীনে ফেরত পাঠানো হবে না।
এ বিষয়ে থাইল্যান্ডে অবস্থিত চীনা দূতাবাস বুধবার মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
এই ৪৮ জন উইঘুর ২০১৪ সালে চীন থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ডে প্রবেশ করে গ্রেপ্তার হওয়া ৩০০ উইঘুরের একটি দলের অংশ। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে শতাধিক উইঘুরকে চীনে ফেরত পাঠায় থাইল্যান্ড। থাই সরকারের এমন পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক সমালোচনার জন্ম দেয়। এসব ব্যক্তির ভাগ্য এখনো অজানা।
এ ছাড়া ২০১৫ সালের জুনে ১৭০ জনের বেশি উইঘুর, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, তুরস্কে পাঠানো হয়েছিল। বাকি ৫০ জনের বেশি উইঘুর থাই বন্দিশিবিরে থেকে যায়। তাদের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে।
সূত্রঃ রয়টার্স
এ ইউ/
Discussion about this post