দীর্ঘ দশ মাস ধরে সৌদি আরবের একটি হিমঘরে (মর্গে) পড়ে আছে প্রবাসী জাহিদুলের মরদেহ। সেই মরদেহ দেশে আনতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন স্ত্রী সুমি আক্তার।
জাহিদুলের স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, সৌদি আরব যাওয়ার এক মাসের মধ্যে মৃত্যু হয় জাহিদুলের। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি উপজেলায়। সে ৫ লাখ টাকা দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সি আল ফাইন ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের মাধ্যমে সৌদি আরব যান।
স্ত্রীর অভিযোগ রয়েছে, বিদেশ যাবার সময় যে কোম্পানির সাথে চুক্তি হয়েছিল। তার সাথে মিল ছিলো না বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থা প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটির কার্ডের তথ্যের। তার দাবি, প্রতারণা করা হয়েছে তার স্বামীর সাথে।
তিনি জানান, তার স্বামী জাহিদুল ২০২৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্য বরণ করে বলে জানতে পারেন। ওই দিন রাতেই এক ব্যক্তি ফোন করে জাহিদুলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপর ওই নম্বরে আর যোগাযোগ করতে পারেননি জাহিদুলের স্ত্রী। পরে অনেক বার কল দেবার চেষ্টা করলেও ওই নম্বর থেকে তাকে ব্লক করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ সুমির।
এরপর থেকেই নিখোঁজ জাহিদুলের মরদেহ। পরে নিহত স্বামীর মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ঘোরেন স্ত্রী সুমি আক্তার।
জাহিদুল বিদেশ যাওয়ার সময় স্ত্রী অন্তঃস্বত্ত্বা ছিলেন, বর্তমানে মৃত জাহিদুলের সেই সন্তানের বয়স দেড়মাস। পরিবার ছোট সন্তানকে নিয়ে জাহিদুলের খোঁজে অনেকবার রিক্রুটিং এজেন্সির সাথেও যোগাযোগ করে সহায়তা পায়নি।
পরে শরণাপন্ন হোন ব্র্যাকের। পরে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম জাহিদুলের মরদেহের খোঁজ ও ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু করে।
চলতি বছরের ১৪ আগষ্ট প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধিনাস্থ ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডে একটি লিখিত আবেদন করে সংস্থাটি। এরপরই ২০ আগষ্ট ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ড জাহিদুলের সন্ধান চেয়ে সৌদি আরবের রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসে চিঠি প্রেরণ করে।
পরে গত ২১ সেপ্টেম্বর ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে পত্রের মাধ্যমে পরিবারকে জানান, জাহিদুল গত সৌদি আরবের রিয়াদে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।
মৃতদেহটি দীর্ঘ ১০ মাস সেদেশের সাকরা হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। মরদেহটি দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে।
Discussion about this post