দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, তিন মাস না যেতেই দেশের মানুষের আসল চেহারা বেরিয়ে আসছে। বিভাজন তৈরি করে দেশেকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে দেশের শত্রুরা।
বক্তব্য প্রদানকালে নির্দিষ্টভাবে কারও নাম মুখে না নিলেও দায়িত্বজ্ঞানহীন বিভিন্ন বক্তব্যের কারণে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট দানব সরকারকে উৎখাত করেছে দেশের ছাত্র-জনতা। তার ফলশ্রুতি কি এই বাংলাদেশ? তিন মাসও যায়নি, রাস্তায় রাস্তায় অবরোধ! হত্যা, রক্তপাত হচ্ছে, জ্বালাও পোড়াও! কেন এই ভয়াবহ হিংসা? সমস্যা কোথায়? আর কত এই বিভাজন?
মির্জা ফখরুল বলেন, ধর্মকে ব্যবহার করে উন্মাদনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করে বিভাজনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য লড়াই করলাম, তা পুড়িয়ে দিচ্ছে। নিজের ঘরেই যদি বিভাজন থেকে যায় তাহলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় উন্মাদনা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি।
এরপর বিএনপির এই নেতা বলেন, কিছু মানুষ দায়িত্বশীল হয়েও উসকানি দিচ্ছে। তাদের নাম বলব না। তারা বিভাজনের পথ তৈরি করছে। তারা দেশের শত্রু না বন্ধু, তা বিচারের ভার জনগণের।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে কোন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? আমাদের সবাইকে দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন কথা বলতে হবে। বিভাজন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে না। এজন্য দেশকে ভালোবেসে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জনগণ বিভ্রান্ত হয়, এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের আতঙ্ক–ভয় কোথায়? আমরা কি বুঝি যে, আততায়ী পেছনে দাঁড়িয়ে আছে? আমরা বুঝলে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বের হতো না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তারা এমন কথা বলবেন না, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে৷ এ সরকার কারও দয়াতে হয়নি, রক্তের ওপর এ সরকার হয়েছে, তাই সরকারের দায়িত্ব জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটানো।
দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য সারাজীবন লড়াই করলাম, সেখানে জ্বালিয়ে দাও-পুড়িয়ে দাও স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এই বাংলাদেশ কখনও দেখতে চাইনি। কারও দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতা জীবন দিয়ে রক্ষা করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্রের উত্তরণ সম্ভব নয়।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, জেলে গেছি, আবার জেলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি, কিন্তু এ দেশ আমরা দেখতে চাই না। যা অন্যায় তার বিরোধিতা করব। যারা সামনে থেকে লড়াই করি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে পিছপা হব না।
এ ইউ/
Discussion about this post