দালালের খপ্পরে পড়ে বিভিন্ন সময় লিবিয়ায় গিয়ে আটকা পড়ে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ৯ প্রবাসী।তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আবেদন করেন স্বজনরা।
বাংলাদেশ দূতাবাস ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তারের সার্বিক প্রচেষ্টা ও সহযোগীতায় অবশেষে দেশে ফিরে আসেন তারা ।
দেশে ফিরে তারা শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এসে কৃতজ্ঞতা জানান ।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার বলেন, লিবিয়ায় অপহরণ হয়ে নির্যাতনের শিকার বাঁশখালীর ৯ জন বাসিন্দার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের সার্বিক সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে রাখার পর ভিডিও বার্তায় দেশে ফেরার আকুতি জানান তারা। একে একে দেশে ফেরার পর তারা শুক্রবার আমার সাথে সাক্ষাৎপূর্বক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে আসেন। তাদের হাসি মাখামুখ এবং পরিতৃপ্ত চোখের চাহনি মনে প্রশান্তি এনে দেয়। বাঁশখালীবাসীর এ ভালোবাসা ও আন্তরিকতাই আমাদের এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা জোগায় বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন ।
আটকে পড়া নয়জন হলেন, গন্ডামারা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার শহীদ উল্লাহের ছেলে রুকনুল ইসলাম, নুরুল আমিনের ছেলে মোরশেদুল আলম, আহমদ কবিরের ছেলে মোহাম্মদ কাউছার মিয়া, আবদুল মোনাফের ছেলে আজগর হোসেন, আবদুল মজিদের ছেলে গিয়াস উদ্দিন, মৃত অলি আহমদের ছেলে মোহাম্মদ আশেক ও তার ভাই ইব্রাহিম খলিল, বাঁশখালী পৌরসভার উত্তর জলদী ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত ওমর আলীর ছেলে আইয়ুব আলী ও কাথরিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বাগমারা এলাকার আবু আহমদের ছেলে মোহাম্মদ করিম।
এর আগে লিবিয়ায় আটকে থাকা প্রবাসীদের বিষয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর তাদের পরিবারের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেন। আটক অবস্থা থেকে ওই ৯ প্রবাসী একটি ভিডিও বার্তাও দেন। ভিডিও বার্তায় তাদের লিবিয়ায় আটক অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়।
ফলে স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে লিবিয়ায় হাইকমিশন সেদেশে আটকে থাকা বাংলাদেশীদের উদ্ধার করে দেশে পৌঁছে দিতে তৎপর হয়ে উঠে। এদিকে লিবিয়া থেকে দেশে ফেরার পর সেই ৯ প্রবাসী গতকাল বৃহস্পতিবার বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের উদ্ধারে সহযোগীতা ও আন্তরিকভাবে কাজ করায় ইউএনও জেসমিন আক্তারের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও তাকে ধন্যবাদ জানান।
উদ্ধার হওয়া প্রবাসীরা অভিযোগ করেন, বাঁশখালীর গন্ডামারা, কাথরিয়া ও জলদী এলাকার এই ৯ প্রবাসী বাঁশখালীর কাথরিয়া ইউনিয়ন ও গন্ডামারা ইউনিয়নের ৩ /৪ জন মানব পাচার কারি তাদের ১০-১২ লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া যান। চুক্তি অনুযায়ী তাদের প্রত্যেককে ভাল বেতনে চাকরি ও কর্মসংস্থানের কথা থাকলেও স্থানীয় মানব পাচারকারী দালালরা তাদের সে দেশের দালালদের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর তাদের উপর নানা ভাবে নির্যাতন চালানোর পর প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদের দেশে ফিরেয়ে আনা হয়।
Discussion about this post