মাদারীপুরে ঘরের দরজা ভেঙে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শ্বাসরোধ করে নিজ সন্তানদের হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত মা তাহমিনা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে মাদারীপুর শহরের সবুজবাগ এলাকায় নিহত শিশুদের নানার বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতরা হলো: পালং থানাধীন পশ্চিম সারেং গ্রামের হালিম খানের ৩ বছর বয়সি মেয়ে জান্নাত ও ১ বছর বয়সি ছেলে মেহরাজ।
স্থানীয়রা জানান, চার বছর আগে শরিয়তপুরের পালং থানাধীন পশ্চিম সারেং গ্রামের আব্দুল হামিদ খানের ছেলে গাড়ির মেকানিক হালিম খানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাহমিনার। এর কিছুদিন পর মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তাহমিনা।
জানা যায়, বুধবার বিকেলে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। পরে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে ৩ বছরের জান্নাত, ১ বছরের মেহরাজের মরদেহ। পাশেই বসে ছিলেন মা তাহমিনা আক্তার।
এলাকাবাসী জানান, দেড় মাস আগে মাদারীপুর শহরের সবুজবাগ এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের তিনতলা ভবনের নিচতলা ভাড়া নেন শরিয়তপুরের পালং থানাধীন চিকনদি গ্রামের তারা মিয়া সরদার। মঙ্গলবার সকালে তারা মিয়ার মেয়ে ও হালিম খানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার দুই সন্তানকে নিয়ে মাদারীপুরে বেড়াতে আসেন।
বুধবার দুপুরে তাহমিনার মা নারগিস বেগম বাড়ির ছাদে জামাকাপড় রোদে শুকাতে দিতে গেলে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন তাহমিনা। অনেক ডাক-চিৎকারেও দরজা না খুললে ৯৯৯ এ কল দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ভারসাম্যহীন তাহমিনা আক্তারকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত দুই শিশুর নানা তারা মিয়া সরদার বলেন, ‘তাহমিনা অনেকদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে চিকিৎসাও করানো হয়েছে। আমার দুই নাতি ও নাতনিকে কিভাবে হত্যা করেছে সেটা বলা যাচ্ছে না।’
স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘দরজা বন্ধ করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে ধাক্কাধাক্কিতে দরজা না খুললে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত মাকে আটক করা হয়েছে।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান ফকির বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শিশু দুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তীতে হত্যার মূল কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানো হবে তাহমিনা আক্তারকে।
এ এ/
Discussion about this post