মাদারীপুরে প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন ইতালি প্রবাসী আল-আমিন নামের এক যুবক। খবর পেয়ে ছুটে আসেন অনার্স পড়ুয়া প্রথম স্ত্রী। এরপরই ভণ্ডুল হয়ে যায় বরযাত্রা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ওই ছাত্রীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, প্রথম স্ত্রী আসার খবরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান আল-আমিন।
শুক্রবার (১২ জুলাই) সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের উত্তর শিরখাড়া গ্রামের এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত আল আমিন ওই এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
জানা গেছে, বিয়ের গেট, তার সঙ্গে সাজানো হয়েছে লাইটিং। আসতে শুরু করেছে আত্মীয়-স্বজন ও পাড়াপ্রতিবেশীও। প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের বরযাত্রা রওনা হবে, শুক্রবার দুপুরে এ সময় হাজির হন প্রথম স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে অনার্স পড়ুয়া মেয়েটির সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে পরিচয় হয় ইতালি প্রবাসী আল আমিনের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক হলে দুজনের পরিবারকে জানানো হয়। সবার সম্মতিতে গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি মেয়েটির বাড়িতে আসে বরপক্ষ। সেখানে বসে আল আমিন ইতালি থাকা অবস্থায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দুজনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মেয়েটিকে নিয়ে আসা হয় স্বামীর বাড়িতে। এর কিছুদিন পর মেয়েটি বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এরপর সবকিছু স্বাভাবিক চলছিল।
এদিকে, এক মাস আগে ইতালি থেকে দেশে আসলেও প্রথম স্ত্রীকে কিছুই জানাননি আল-আমিন। গোপনে নিতে থাকেন বিয়ের প্রস্তুতি। শুক্রবার দুপুরে বরযাত্রা যখন রওনা হবে, খবর পেয়ে তখনই হাজির হন আল-আমিনের স্ত্রী। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসে পুলিশও।
ভুক্তভোগী জানান, আল-আমিনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে আমার বিয়ে হয়েছে। আমাকে কিছুই না জানিয়ে আল-আমিন অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি কিছুতেই তা মেনে নিতে পারছি না। প্রয়োজনে থানায় যাব। তবুও আমি আমার স্বামীর স্বীকৃতি আদায় করে ছাড়ব।
আল-আমিনের বাবা মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ছেলের সাথে ওই মেয়েটির বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু এখন ডিভোর্সের প্রক্রিয়া চলছে। আমরা ছেলেকে অন্যত্র বিয়ে করাব।
কী কারণে অন্যত্র বিয়ে করাবেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মেয়েটি খারাপ, সেজন্য তাকে বাড়িতে তুলব না।
শিরখাড়া ইউনিয়ন সাবেক ইউপি সদস্য নুর হোসেন বলেন, আল আমিন ভুলবুঝে ওই মেয়েটিকে বিয়ে করেছিল। পর মেয়েটি আরেকটি ছেলের সঙ্গে চলে গেছে। এ জন্য এই বাড়িতে মেয়েটিকে আর গ্রহণ করা হবে না।
আল-আমিনের স্বজনদের দাবি, আল-আমিনের সঙ্গে বিয়ের পর অনার্স পড়ুয়া ওই ছাত্রী আরেকটি ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। সেখানে তার বিয়েও হয়েছে। তাই তাকে আর মেনে হওয়া হবে না।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টিবি
Discussion about this post