উন্নত জীবনযাপনের লক্ষ্যে অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলোতে পাড়ি জমান। কেউ লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে আবার কেউ কাজের জন্য। চাকরিসূত্রে হোক বা অন্য কোনো উপায়ে, নতুন দেশে গিয়ে বসতি স্থাপনের চেষ্টা করেন কমবেশি সবাই। তবে চাইলেই তো সব মেলে না। বিশেষ করে এমন কিছু দেশ আছে যেখানকার নাগরিকত্ব পাওয়া অনেক কঠিন।
জেনে নেয়া যাক কোন কোন দেশের নাগরিক হওয়া কঠিন….
ভ্যাটিকান সিটি

ভ্যাটিকান পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র। সমগ্র রাজ্যে আনুমানিক প্রায় ৮০০ জন মানুষ বসবাস করেন, এদের মধ্যে ৪৫০ জন এখানকার নাগরিক। ইউএস লাইব্রেরি অব কংগ্রেস অনুসারে, ভ্যাটিকান সিটির বাসিন্দা হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই একজন ক্যাথলিক কার্ডিনাল হতে হবে এবং যারা ইতিমধ্যেই রোম বা ভ্যাটিকান সিটিতে বসবাস করছেন। নাগরিকত্ব পাওয়ার আরেকটি উপায় হল সরাসরি চার্চ প্রশাসনের কাছে আবেদন করা। তবে হ্যা, সেই আবেদনও শুধুমাত্র সেই ব্যক্তিরাই করতে পারবেন যাদের ভ্যাটিকান সিটিতে বসবাসের জন্য বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এবং সেই ব্যক্তি স্বামী বা স্ত্রী এবং সন্তানরাও এই পদ্ধতিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য।
অস্ট্রিয়া

আপনি যদি অস্ট্রিয়াতে কোনো পেশায় নিযুক্ত থাকেন, আর সেটির যদি চাহিদা থাকে তাহলে হয়তো আপনি সেখানে সেটেল হতে পারবেন। বর্তমানে সেখানে মাত্র ১১টি পেশার চাহিদা আছে।এর বাইরে কেউ অন্য পেশায় নিযুক্ত থাকলে তাকে শীর্ষস্থানীয় হতে হবে, না হলে নাগরিকত্ব মিলবে না। পাশাপাশি ব্যক্তিকে ১০ বছর অস্ট্রিয়াতে থাকতে হবে, জার্মান ভাষা শিখতে হবে ও অস্ট্রিয়ার নাগরিকত্বের জন্য অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিতে হবে।
ভুটান

বিশ্বের সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ভুটান। পর্যটকদের কাছে দেশটি দারুণ আকর্ষণীয়। ভুটানের নাগরিকত্ব আইন অনুসারে, জন্মের সময় কোনো শিশুকে নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য, পিতামাতা উভয়কেই ভুটানের নাগরিক হতে হবে।যাদের অভিভাবকদের মাত্র একজন ভুটানি, তাদের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার আগে ১৫ বছর অপেক্ষা করতে হবে। রাজা বা দেশের বিরুদ্ধে কথা বলে ধরা পড়লে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া যায়।
জাপান

জাপানের নাগরিক হতে হলে প্রথমে আপনাকে ৫ বছর জাপানে থাকতে হবে। আপনাকে অন্য দেশের নাগরিকত্বও ছেড়ে দিতে হবে।একবার আপনি যোগ্য হয়ে গেলে ও আবেদন করলে, আপনাকে একটি পর্যালোচনা ও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। যা সম্পূর্ণ হতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।
চীন

২০২০ সালের আদমশুমারি অনুসারে চীনের জনসংখ্যা বিশ্বে দ্বিতীয়। আর আদমশুমারির হিসাব অনুযায়ী, এই দেশে এক বিলিয়নেরও বেশি আবেদনকারীর মধ্যে মাত্র ৯৪১ জনকে নাগরিক করা হয়।আইন অনুসারে, চীন সরকার কোনো বিদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তিদের নাগরিক হওয়ার জন্য তখনই অনুমতি দেয়, যখন তার কোনো আত্মীয় চীনা নাগরিক হন।
জার্মানি

জার্মান নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য, আপনাকে অবশ্যই জার্মান ভাষায় কথা বলতে ও দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও সমাজ সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। সে দেশে চাকরি ও বসবাসের প্রমাণও দিতে হবে। সেই নাগরিককে কমপক্ষে ৮ বছর জার্মানিতে থাকতে হবে ও অন্য কোনো নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে।
এসব দেশে স্থায়ী হওয়ার জন্য আপনি যতই পরিশ্রম করুন না কেন, শুধু নির্বাচিত ব্যক্তিদেরকেই নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। তাই এসব দেশে নাগরিকত্ব পাওয়া বেশ মুশকিল।
Discussion about this post