অবশেষে শেষ হলো বাঙালির প্রাণের মেলা; বইমেলা। প্রতি বছরের মতো এবারের বইমেলাও শুরু হয়েছিল ১ ফেব্রুয়ারি। মাসজুড়ে বাংলা একাডেমি থেকে শুরু করে সোওরাওয়ার্দী উদ্যান অবধি উৎসবমুখর পরিবেশে চলে এ উৎসব। যদিও কর্তৃপক্ষ দুদিন বাড়িয়ে এবছর সেই উৎসবের ইতি টানে শনিবার।
প্রতি বছরই এ মেলায় নানান সংযোজন নিয়ে আসে বাংলা একাডেমি; যার ব্যতিক্রম ছিলো না চলতি বছরেও।
শনিবার (২ মার্চ) অমর একুশে বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এবারের বইমেলায় নতুন সংযোজন কী ছিল, তা জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক শাহেদ মমতাজ।
তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের সহায়তায় বইমেলার আয়োজন করা হয়। এ বছর একাডেমি নিজস্ব তত্ত্বাবধানে বইমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়নও করে।
শাহেদ মমতাজ আরও বলেন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের সাথে সভা করে বইমেলা শুরুর আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন চালু করার ব্যবস্থা করা হয়। এর ফলে ঢাকার উত্তরাঞ্চলের জনগণের যাতায়াতের সুবিধাসহ বইমেলায় জনসমাগম বাড়ে।
শাহেদ মমতাজ জানান, অন্যান্য বছর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের গেইট কেবল শুক্র ও শনিবার খোলা হতো। এ বছর পুলিশের সহায়তায় প্রতিদিন খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের পরামর্শে নিরাপত্তার স্বার্থে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের গেইট থেকে মেলার গেইট পর্যন্ত পথে টিনের ট্যানেল তৈরি করে দেয়া হয়েছে।
বইমেলার সৌন্দর্য সমুন্নত রাখতে গণপূর্তের সাথে আলোচনাক্রমে মেলা পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে খাবারের স্টল পূর্ব দিকের প্রাচীর ঘেঁষে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপ-পরিচালক বলেন, টিএসসির প্রবেশ মুখের ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট বসতো। সেটা বন্ধ করার জন্য এবার ওই অংশটুকু মেলা প্রাঙ্গণের আওতাভুক্ত করায় দর্শনার্থীদের চলাচলে সুবিধা হয়েছে।
শাহেদ মমতাজ বলেন, প্রধান সড়কের প্রবেশমুখে এবং বইমেলার প্রত্যেক প্রবেশমুখে সুদৃশ্য গেইট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া শিশু কর্নারের পরিসর সাধ্যমতো কিছুটা বাড়ানোসহ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। গ্রন্থ সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ বছর পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে কয়েক দফায় কয়েকটি প্রতিনিধি দল বইমেলায় এসেছেন। পাশাপাশি আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশিষ্ট ব্যক্তবর্গ এবং লেখক, পাঠক ও ক্রেতা মেলায় এসেছেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের একুশে বইমেলায় ৬০ কোটিরও বেশি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। যা ২০২৩ সালের তুলনায় অন্তত ১৩ কোটি টাকা বেশি। গতবছর মেলায় বই বিক্রি হয়েছিল ৪৭ কোটি টাকার। এ বছর বই প্রকাশিত হয়েছে ৩ হাজার ৭৫১টি। আর ৩ হাজার ৭৩০টি বই গতবছর প্রকাশিত হয়।
এফএস/
Discussion about this post